স্পাউস ভিসা শর্তের জালে বাংলাদেশে কমে গেছে ‘লন্ডনী বিয়ে’
মুনজের আহমদ চৌধুরী: ব্রিটেন স্পাউস ভিসা শর্ত কঠোর করায় বাংলাদেশে কমে গেছে ‘লন্ডনী বিয়ে’র হার। বাংলাদেশী যারা ব্রিটেনে বাস করেন, তারা এই কঠোর শর্তারোপের কারণে ছেলে বা মেয়েকে নিয়ে দেশে এসে বিয়ে দিতে সাহস পাচ্ছেন না। মূলত ব্রিটেন সরকার স্পাউস ভিসায় স্বামী বা স্ত্রীকে ব্রিটেনে নিয়ে যেতে বছরে বিরাট অংকের আয়সীমা বেঁধে দেয়ার কারণে প্রতিবছর অসংখ্য স্পাউস ভিসা প্রার্থী বাধাগ্রস্থ হচ্ছেন।
ব্রিটেনে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি বড় অংশই বাংলাদেশে এনে সন্তানদের বিয়ের আয়োজন করেন। এ ধারাবাহিকতা চলে আসছে যুগ যুগ ধরেই। বিলেত প্রবাসী বর কনেদের দেশে এসে বিয়ে করার এই লন্ডনী বিয়ের হারও স্পাউস ভিসায় শর্তারোপের কারনে অনেকটা কমে গেছে।
ব্রিটেনের আইনে ইউরোপের বাইরে থেকে স্পাউস আনতে স্পন্সরের বছরে কমপক্ষে ১৮ হাজার ৬শ পাউন্ড আয় থাকতে হবে।
মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এ নতুন আইনের কারনে ৪৭ শতাংশ কর্মরত ব্রিটেনের নাগরিকের পক্ষে ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে স্পাউস আনা সম্ভব হচ্ছে না। স্পাউস ভিসা পাবার ক্ষেত্রে এ বিড়ম্বনার কারনে ব্রিটেনে এখন অনেক পরিবারে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ দূরত্বের। স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানদের মধ্যে বিরাজ করছে বিচ্ছেদের বেদনা।
মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কের পলিসি ডাইরেক্টর রুথ গ্রুভ বলেছেন, আয়সীমার এ বিশাল দেয়াল মানুষের সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে। যে ব্যক্তি নির্ধারিত সীমায় আয় করতে ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি তার পরিবার থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।
এদিকে হোম অফিসের ইমপেক্ট এসেসমেন্টে দেখা যাচ্ছে, স্পাউস ভিসার নতুন নিয়মে প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার ৮শ ভিসা প্রাপ্তি বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে হাইকোর্ট ১৮ হাজার ৬শ আয়ের নিয়মাবলীকে অবৈধ ঘোষণা করে সরকারকে এই আয়ের সীমা ১৩ হাজার ৫শ পাউন্ড করার নির্দেশ দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলেও রায় প্রকাশ করা হয়নি এখনও।