লন্ডনে ড. আবুল লেইসের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
মোহাম্মদ (সাঃ) সব মানুষের জন্য আদর্শ
পৃথিবী থেকে অন্যায় ও পাপাচার দূর করতে, মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে হয়রত মোহাম্মদ (সাঃ) কে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহ। তিনি এ ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করেছিলেন। মোহাম্মদ (সাঃ) সব মানুষের জন্য আদর্শ।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে বিশিষ্ট লেখক ও ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড উইনার ড. মোহাম্মদ আবুল লেইস এর ‘মোহাম্মদ (সাঃ): ওয়ান থাউজেন্ড ওয়ান উইনিভার্সাল এপ্রিসিয়েশনস এন্ড ইন্টারফেইথ আন্ডারস্টেন্ডিং এন্ড পিস’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাস্টিস অব পিস এর সভাপতি ফজলুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ক্যামডেন এর পার্লামেন্ট হিল স্কুলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বৃটিশ এমপি এমিলি থর্নব্যারি।
সাঈফ আহমেদ কাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট লেখক আমির আহমদ সিংকাপনি, সাংবাদিক ফরিদ আহমদ রেজা, ক্যারিয়ার কনসালটেন্ট অ্যান্ডি গেডনার, লিডার অব দ্যা ক্যামডেন কাউন্সিল সারাহ হ্যাওয়ার্ড, ক্যাথারিন ওয়েস্ট, আইসলিংটন এর সাবেক কাউন্সিল মোশতাক আহমেদ, জ্যামস মুররে, প্রফেসর ড. এটিএম জামিল, আইনজীবি রাজ চাঁদ, মাওলানা মুফতি মুনতাকিম, ওয়েস্ট মিনিস্টার ফেইথ ফোরামের পরিচালক জন ডাল ডিন, জয়নাল উদ্দিন ও তওহীদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কেমডেন এর সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম পুতুল, বিডব্লিউএ এর সাবেক সভাপতি শামিম আহমদ, সাবেক সহসভাপতি সাঈফ আহমদ কাজী, ড্রুমন্ড স্ট্রীট মসজিদের সাবেক সভাপতি মোবাশ্বির আলী, আইসলিংটন এর সাবেক মেয়র জিলানি চৌধুরী, চেলটন স্ট্রীট মসজিদের কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মালিক, কমিউনিটি নেতা ডা: মোহাম্মদ গোলাম ইসদানি, শাহনেওয়াজ আহমদ, ওয়েস্ট ইউস্টন পার্টনারশিপ সভাপতি জয়নাল উদ্দিন, বিডব্লিউএ এর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ছালিক ও কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ তওহীদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃটিশ এমপি এমিলি থর্নব্যারি বলেন, আমি এ বইটি পড়েছি। এটি পড়ে ইসলামের মূল বিষয়গুলো জানতে পেরেছি। আমি এ বিষয়ে একমত যে এই মূলনীতি গুলো আমার জীবনে কাজে লাগবে।
লিডার অব দ্যা ক্যামডেন কাউন্সিল সারাহ হ্যাওয়ার্ড বলেন, মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে শান্তি ও সহানুভূতিপূর্ণ অবস্থান তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডা: লেইস এর লিখা বইটি এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। তিনি বলেন, এটা আনএন্দর বিষয় যে কেমডেন এ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক এক হয়ে বাস করে, যাদের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্বাসের মানুষ আছে। তারা একসাথে অবস্থান করছে।
ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, যে জিনিসটি বিভিন্ন সম্প্রদায়কে এক হতে সাহায্য করে সেটি নিসন্দেহে ভালো প্রয়াস। আমি বইটি পড়েছি এবং এটি পড়তে বলবো। এ আহবান কেবল বিশ্বাসের দৃষ্টিকোণ হতে নয়, এটা সম্প্রদায়ের একজন সদস্য হিসাবে বলছি, যাতে করে সবাই মিলে আমরা সুন্দর একটি সমাজ তেরি করতে পারি।
মোরাদ কুরাইশি বলেন, আমি এ বইটি পেয়ে আনন্দিত। সব বিশ্বাসই ন্যায়ের কথা বলে। আমি এটি নিয়ে মাইকেল গোব এর কাছে যাবো।
অ্যান্ডি গার্ডেনার বলেন, আমি যখন এ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেলাম, তখনি একজন ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজার হিসাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, ইসলাম ও ক্যারিয়ার এসব নিয়ে ভাবছিলাম। আমরা এখন কোথায়, আমরা কি করতে চাই এসব অনেক প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খায়।
তিনি বলেন, আপনারা ডা: লেইসের ‘ মোহাম্মদ (সাঃ) এন্ড টেরোরিজম’ চেপ্টারে থাকালেই কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়ে যাবে। কিছু মানুষ কোরআন সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে।
আমির আহমেদ সিংকাপনি বলেন, ইসলাম সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা পেতে মুসলিমদের পাশাপাশি অমুসলিমদেরও এ বইটি পড়া উচিত। ইসলাম নিয়ে অনেক ভুল বুঝা-বুঝি ছড়ানো স্বত্ত্বেও ইসলাম ও মোহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে অমুসলিম অনেক বিদ্বান, রাজনীতিবিদদের উচ্চ ধারণা রয়েছে।
জেমস মুররে বলেন, আমার পিছনে ব্যানারে লেখা রয়েছে ‘আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য’। আইসলিংটন এ মুসলিমসহ আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। আমাদেরকে একতার এ বার্তা নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।
জেকি মেক মেনাস বলেন, আমি ডা: লেইসএর সাথে কাজ করেছি। তিনি আমাকে ইসলামের শান্তি ও ভালবাসার বেশ কিছু বিষয় শিখিয়েছেন। আমি মনে করি তিনি তার জীবনে অনেক বড়ো একটা কাজ করেছেন।
সাংবাদিক ফরিদ আহমদ রেজা বলেন, সপ্তম শতাব্দিতে যখন আরবে অন্যায়, অবিচার, মূর্তিপূজা চলছিলো, পুরো আরব যখন গোত্রে গোত্রে হানাহানি ও সংঘাতে লিপ্ত ছিলো, সে মুহূর্তে আল্লাহ মোহাম্মদ (সাঃ) কে পৃথিবীতে পাঠালেন। মোহাম্মদ (সাঃ) মানুষকে আলোর পথ দেখালেন। তাদেরকে মানবতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দিলেন।
মাওলানা মুফতি মুনতাকিম বলেন, ১৪০০ বছর পূর্বে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সবার কাছে আল-আমিন হিসাবে পরিচিত ছিলেন। আজও অমুসলিমরা তাঁকে মহান ও বিশ্বস্ত বলে মানে।
লেখক ডা: মোহাম্মদ আবুল লেইস বলেন, এ বই আমার গবেষণার ফসল। এ বইটি মহানবী হয়রত মোহাম্মদ (সাঃ) এর সম্পর্কে সত্যিকারভাবে জানতে সহায়তা করবে। এটি ইসলাম ও পশ্চিমাদের মধ্যে ভূল বুঝা-বুঝির ব্যবধান কমাবে। এবং একি সাথে বিভিন্ন সম্পদ্রায়ের মধ্যে একতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।