স্বাধীনতা প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত স্কটল্যান্ডবাসী
৭০০ বছর আগে স্কটিশরা ব্যানকবার্নের যুদ্ধে শক্তিশালী ইংরেজদের পরাজিত করে প্রথমবারের মতো কয়েক শ’ বছর ধরে স্বাধীনতা ভোগ করে আসছে। এখন অবশ্য কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ নয়। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) থাকবে না এককভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে জনগণ অংশ নিচ্ছেন গণভোটে। গণভোট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন স্কটল্যান্ডবাসী। জনগণের এক অংশ ইইউর সাথে থাকতে চাচ্ছেন। আবার অন্য অংশ চাচ্ছেন পুরোপুরি স্বাধীনতা। কারো কারো কাছে স্বাধীনতা শব্দটিকে দুঃস্বপ্ন মনে হয়। কেউ কেউ বলছেন, এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন স্কটল্যান্ড আরো আত্মপ্রত্যয়ী হতে পারে।
৫০ লাখের কিছু বেশি মানুষ বাস করে স্কটল্যান্ডে। ছোট এই দেশটি তখন দ্রুত কোনো সঙ্কট মোকাবেলা করতে পারবে। যেমন করে আইসল্যান্ড অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করেছে। ম্যাক নামে এক স্কটিশ মনে করেন, স্বাধীন স্কটল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কি না, তা নিজেরাই ঠিক করতে পারে। তিনি নিজে ইইউ-এর জোর সমর্থক হলেও বিষয়টি স্কটিশ জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
ম্যাকের সহযোগী এক ব্যবসায়ী স্লোয়ান মনে করেন, ব্রিটেনে তো স্কটল্যান্ডের অবস্থা ভালোই। আমরা এটা ছেড়ে দেবো কেন? এজন্য অর্থনৈতিক পরিণাম নিয়েও উদ্বিগ্ন স্লোয়ান। স্লোয়ানের মতো অনেকে বলছেন, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সুফল বয়ে আনবে না। কেননা নিজস্ব পরিকাঠামো গড়ে তোলার মতো স্কটল্যান্ডের যথেষ্ট আয়ের উৎস নেই। এ ছাড়া স্বাধীন স্কটল্যান্ডে সম্ভাব্য লেবার সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য ইতিবাচক হবে না বলে মনে করেন তারা। স্কটল্যান্ডে ঐতিহ্যগতভাবে বাম ঘরানার দলগুলো নির্বাচন করে থাকে। আবার কারো আশঙ্কা, দরিদ্রদের কল্যাণে বিত্তশালীদের ওপর আরো বেশি কর আরোপ করা হতে পারে। এর ফলে অর্থ বিলীন হয়ে যেতে পারে। যুক্তরাজ্যের একটা ছোট অংশ স্কটল্যান্ড। ইইউর সাথে থাকা না থাকা নিয়ে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে দেশটিতে।
জরিপ অনুযায়ী, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা বিরোধীদের সংখ্যা সমর্থকদের চেয়ে সামান্য বেশি। স্কটল্যান্ডের সর্বত্রই অনেক ভোটার এখনো দোদুল্যমান। সবশেষে হয়তো এই ভোটাররাই গণভোটের ফলাফলে প্রভাব বিস্তার করবেন। নির্ধারিত হবে ৩০০ বছরে পুরনো ইউনিয়নের (যুক্তরাজ্যের) অন্তর্ভুক্ত থাকবে কি না দেশটি না একক স্বাধীনতা ভোগ করবে। –ডি ডব্লিউ