রমজানেও চলছে ইসরাঈলি পাশবিকতা, নিহত ৮৮

Israelপবিত্র রমজান মাসেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর ওপর ইহুদিবাদী ইসরাঈলের পাশবিক হামলা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারও সেখানকার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ইসরাঈলি বিমান হামলায় ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে নিরীহ নারী ও কোলের শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না। গাজায় গণহত্যা চলছে বলে দাবি করছে সেখানকার বাসিন্দারা। ইহুদিদের নির্বিচার বিমান হামলা ও মিসাইল নিক্ষেপে প্রাণ হারাচ্ছে মুসলমানরা।
গত তিনদিনের টানা ইহুদিবাদী হামলায় গাজা উপত্যকার অন্তত ৮৮ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। আজ উপত্যকার খান ইউনিস শহর ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালায় ইসরাঈলি জঙ্গিবিমান।
ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত তিনদিনের হামলায় ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এদিকে ইহুদিবাদী সেনাপ্রধান বেন্নি গানতেয গাজা উপত্যকায় স্থলবাহিনী পাঠানোর বিষয়টি অনুমোদন করেছেন বলে জানা গেছে। আর তাই যেকোন মুহূর্তে শুরু হতে পারে ইহুদিদের স্থল আগ্রাসন। ঝরতে পারে আরো রক্ত।
হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি-মুন বলেছেন, গাজা উপত্যকা এখন ধারালো অস্ত্রের মুখের যেন দাঁড়িয়েছে। উভয়পক্ষের উচিত অস্ত্র বিরতিতে যাওয়া। আমরা চাইনা মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ বাধুক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ ইস্যুতে তার চতুর অবস্থান ব্যক্ত করে বলেছেন, রকেট হামলায় আত্মরক্ষার অধিকার ইসরাঈলের রয়েছে।
আরবলীগ এ হামলার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক ডাকার আহবান জানিয়েছে। একি সাথে হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিকগোষ্ঠীকে চাপ দেওয়ার কথা বলেছে।
মুসলিম কোন সরকার প্রধান এ পর্যন্ত হামলার তীব্র নিন্দা না জানালেও  কড়া সমালোচনা করেছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদিরো। তিনি বলেছেন, অবৈধ ইসরাঈল অন্যায়ভাবে গাজার লোকদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
ফিলিস্তিনি ঐক্য সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোফিদ আল-হাসাইনা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ৮ জুলাইর ইসরাইলি হামলায় গাজা উপত্যকার ৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস ও আরো ১,৭০০ বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ঐক্য সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালাচ্ছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা রাতে হামাসের ৩ শতাধিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এদিকে এ অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় সাড়ে ৭শ’ অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজার হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারির পর থেকেই ফিলিস্তিনি ভূ-খন্ডে সারা রাত ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
২০১২ সালের পর থেকে গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড় অভিযান।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর বুধবারের অভিযানে ২৯ এবং মঙ্গলবার ২১ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হওয়ায় এ নিয়ে মোট ৮৮ জন নিহত হলো। হাসপাতালের প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব নিহতের মধ্যে ১১ জন নারী ও ১৮ শিশু রয়েছে।
এদিকে অবিলম্বে ইসরাইল ফিলিস্তিনি দুপক্ষকেই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতাইয়াহু বরং হামলা বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন অবিলম্বে ইসরাইল ফিলিস্তিনি দুপক্ষকেই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি সভায় তিনি বলেন, অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ অগ্রহণযোগ্য যার চরম খেসারত দিতে হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতাইয়াহু বরং হামলা বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ে আলাপে নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
তিনি বলেন, ইজরায়েল ফিলিস্তিনের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ বহনের ক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যের নেই। তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন দুপক্ষকেই।
ইসরাইলের কর্তৃপক্ষ যেমনটা বলছে হামলার লক্ষ্যবস্তু হামাসের সদস্যরা কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, এই হামলায় বেসামরিক নাগরিকই বরং আক্রান্ত হচ্ছেন।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকি এই হামলাকে একটি সহিংসতার ক্যাম্পেইন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তা চলতে থাকলে আরো অনেক প্রাণ বিনষ্ট হবে।
ভারি অস্ত্র দিয়ে ৮০০ জনের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার চালানো হয়েছে এবং তা মূলত বেসামরিক ঘরবাড়ি ও মসজিদ বলে তিনি জানান।
এদিকে একটি যুদ্ধ বিরতিতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করে সংঘর্ষ বন্ধ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button