গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, বিএনপি-জামায়াতের নিন্দা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদি ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ।
শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসেও ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠী ইসরাইলি বর্বর আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে গাজা উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে রেখে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে ভয়াবহ মানব বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার পরও পুনঃপুন তাদের ওপর চলছে ইসরাইলি সামরিক অভিযান। গত কয়েক দিনের নির্বিচারে বর্বরোচিত বিমান হামলায় নারী ও কোলের শিশুসহ শতাধিক ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ৬০০ জনের অধিক ফিলিস্তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। বিপন্ন ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গাজা উপত্যকায় লোকালয়ের পর লোকালয় এখন বিরাণভূমিতে পরিণত হয়েছে। দিশেহারা হয়ে জীবন বাঁচাতে গিয়ে এখন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
বেগম জিয়া বলেন, “আধিপত্য-ক্ষুধা মেটাতে ইসরাইল মানবিকতার সকল চিহ্ন মুছে ফেলে সন্ত্রাসবাদকেই রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে মেনে চলছে। তাদের এই আচরিত নীতির কারণেই নারী-শিশুসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনির রক্ত ঝরছে এবং নিজ বাস্তুভিটা থেকে ফিলিস্তিনিরা অতীতেও যেমন উচ্ছেদ হয়েছে, তেমনিভাবে এখনও হচ্ছে। এবারে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান। মনে হয় ফিলিস্তিনিদের শেষ অস্তিত্বটুকু নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত তাদের প্রতিহিংসার থাবা বিস্তার লাভ করতেই থাকবে।”
অবিলম্বে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর ‘অন্যায় বর্বরোচিত’ হামলা বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ইসরাইল যদি তার আগ্রাসী মনোভাব বরাবরের মতো অব্যাহত রাখে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে কখনোই শান্তি ফিরে আসবে না।
তিনি ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান বন্ধে চাপ সৃষ্টি করার জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় গাজায় লাশের পর লাশ পড়ছে। সেখানে গণহত্যা চলছে। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু-কিশোরের রক্তে ভেসে যাচ্ছে গাজা উপত্যকা। ইসরাইলের বিমানবাহিনী হামলা চালিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর মিলে নিহতদের সংখ্যা ইতোমধ্যেই এক’শ ছাড়িয়ে গেছে। শত শত লোক আহত হচ্ছে। নিহত এবং আহতরা বেসামরিক লোক। ইসরাইল স্থল পথেও আক্রমণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ব জনমত উপেক্ষা করে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হলেও ইসরাইল হামলা বন্ধ করছে না। দস্যুরাষ্ট্র ইসরাইল বিশ্ব জনমতের কোনো তোয়াক্কাই করছে না।”
জামায়াত নেতা গাজায় ইসরাইলী নৃশংস হামলা ও গণহত্যা বন্ধ করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং শান্তিকামী রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান।