ফিলিস্তিনীদের জন্য তোমাদের হৃদয় কী বিদীর্ণ হয় না?
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সিসটেমেটিক বা পদ্ধতিগত গণহত্যা সংঘটিত করতে চায় ইহুদিবাদী ইসরাইল। গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুল শহরে ইসলামী বিশেষজ্ঞদের এক ইফতার মাহফিলে দেয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন এরদোগান। গাজার নিরপরাধ মানুষের ওপর ইসরাইলের বিমান হামলার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি।
এরদোগান বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে আমরা এই প্রথমবারের মতো লড়ছি না। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল সৃষ্টির পর থেকে আমরা প্রতিদিন, প্রতি মাসে এ ধরনের ঘটনা দেখে আসছি।’ তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সমাজ ফিলিস্তিনিদের কথায় গুরুত্ব না দেয়ার কারণেই পবিত্র রমযান মাসেও পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের অপরাধের বিষয়ে চুপ রয়েছে। সর্বোপরি প্রতি রমযানে আমরা এই পদ্ধতিগত গণহত্যার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করছি।
গত ৮ জুলাই থেকে ইসরাইল গাজার ওপর বিমান হামলা শুরু করে। এ হামলায় এ পর্যন্ত ২৪৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। গাজার ওপর ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এরদোগান জাতিসংঘেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ কী জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শান্তির জন্য? তারা বিশ্ব শান্তির জন্য কোনো অবদান রেখেছে? তিনি বলেন, জাতিসংঘ শুধু তার গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
‘পশ্চিমা বিশ্ব নীরব রয়েছে, একই অবস্থা মুসলিমবিশ্বের। কারণ যারা মারা যাচ্ছেন তারা ফিলিস্তিনি। আপনারা তাদের কণ্ঠ শুনতে পান না’Ñ যোগ করেন এরদোগান। ধর্মপরায়ণ এরদোগান ফিলিস্তিনিদের জন্য এক সোচ্চার কণ্ঠস্বর। সমগ্র মুসলিমবিশ্বের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে চান তিনি।
আগামী ১০ আগস্ট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনায়াসেই তিনি জয়ী হবেন বলে বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিচ্ছেন। ফিলিস্তিনিদের দুর্দশায় উদাসীনতার জন্য এরদোগান নাম না উল্লেখ করেই মুসলিমবিশ্বের, বিশেষ করে রাজতান্ত্রিক আরব দেশগুলোরও সমালোচনা করেন। এসব দেশের সাথে শীতল সম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন এরদোগান।
এরদোগান বলেন, ‘মুসলিমবিশ্বকে আমার প্রশ্নÑ আপনাদের হৃদয় কী এতে বিদীর্ণ হয় না? পশ্চিমাদের কথা ভুলে যান, আপনার পরিবারই যদি পাশে না দাঁড়ায় তবে অন্যের কী দায় পড়েছে?’ ন্যাটো সদস্য তুরস্কের সাথে ইসরাইলের দীর্ঘদিনের উষ্ণ সম্পর্ক ছিল।
তবে ইসলামপন্থী এরদোগান ক্ষমতায় আসার পরই সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি হতে থাকে। ২০১০ সালে গাজা অভিমুখী ফ্লোটিলায় ইসরাইলি হামলায় ১০ তুর্কি নিহত হওয়ার পর সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে ইসরাইল। তবে সম্প্রতি এরদোগান বলেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ না হলে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।