ছয় নোবেলজয়ী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আহ্বান
ইসরাইলের ওপর সামরিক অবরোধ আরোপ করুন
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের নৃৃশংস আগ্রাসনের প্রতিবাদে ছয়জন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব অবিলম্বে ইসরাইলের ওপর সামরিক অবরোধ আরোপের জন্য জাতিসঙ্ঘ এবং সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ১৯ জুলাই তাদের এই আহ্বান-সংবলিত চিঠিটি প্রভাবশালী গার্ডিয়ানে প্রকাশিত হয়েছে।
ছয় নোবেল পুরস্কারজয়ীরা হলেন আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, অ্যাডোলফো পেরেস এসকুইভেল, যদি উইলিয়ামস, মেইরিড ম্যাগুইর, রিগোবার্তা মেনচু ও বেটি উইলিয়ামস।
অন্য স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রখ্যাত চিন্তাবিদ নোয়াম চমেস্কি, রজার ওয়াটার্স, নাট্যকার ক্যারিল চার্চিল, মার্কিন র্যাপার বুটস রিলে, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের সভাপতি জোয়াও অ্যান্টোনিও ফেলিসিও, কনফেডারেশন অব সাউথ আফ্রিকান ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জওয়েলিঙজিমা ভ্যাভি।
তারা বলেন, ইসরাইল আবারো গাজা উপত্যাকায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর পূর্ণ সামরিক শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, যা অমানবিক এবং অবৈধ সামরিক আগ্রাসন। গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় অসংখ্য বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, শত শত লোক আহত হয়েছে, স্বাস্থ্য খাতসহ বেসামরিক অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
দায়মুক্তিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া সামরিক সহায়তার বলেই ইসরাইল এ ধরনের বিপর্যয়কর হামলা চালানোর সামর্থ্য অর্জন করতে পেরেছে।
২০০৯ থেকে ২০১৯ সময়কালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সামরিক সাহায্য দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া ইসরাইলের বার্ষিক সামরিক রফতানি কয়েক বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপিয়ান দেশগুলো ইসরাইলে বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র রফতানি করেছে।
তারা বলেন, ভারত, ব্রাজিল ও চিলির মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলো ফিলিস্তিনি অধিকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা সত্ত্বেও ইসরাইলের সাথে সামরিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা দ্রুত বাড়াচ্ছে।
ইসরাইলের সাথে অস্ত্রের আমদানি ও রফতানিতে জড়িত থেকে এবং ইসরাইলি সামরিক প্রযুক্তি বিকাশের ব্যবস্থা করে দিয়ে সরকারগুলো কার্যত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধসহ ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসনকে সমর্থন করার স্পষ্ট বার্তাই পাঠাচ্ছে।
তারা বলেন, সামরিক ড্রোন উৎপাদন ও রফতানিতে ইসরাইল বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয়। নির্যাতনের জন্য তৈরি ইসরাইলের সামরিক প্রযুক্তি ‘মাঠে পরীক্ষিত’ হিসেবে সত্যায়িত এবং সারা বিশ্বে তা রফতানি হয়ে থাকে।
সামরিক বাণিজ্য এবং যৌথ সামরিক-সম্পর্কিত গবেষণা ইসরাইলকে আন্তর্জাতিক আইন সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করতে এবং দখলদারিত্ব, উপনিবেশকরণ এবং ফিলিস্তিনি অধিকার পরিকল্পিতভাবে প্রত্যাখ্যান করতে সাহসী করে তুলেছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বর্ণবাদ আমলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যে ধরনের ব্যাপকভিত্তিক সামরিক অবরোধ আরোপ করা হয়েছিল, সে ধরনের অবরোধ অবিলম্বে আরোপের জন্য জাতিসঙ্ঘ এবং সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে একাত্ম প্রকাশকারী সরকারগুলো ইসরাইলি সামরিকবাদ, নৃশংসতা ও দায়মুক্তি মোকাবিলায় অবশ্যই ইসরাইলের সাথে সব ধরনের সামরিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। আজ ফিলিস্তিনিদের দরকার কার্যকর সংহতি, দান-খয়রাত নয়।