লন্ডন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নারী উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির ‘ভূয়সী প্রশংসা’ করে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ডেভিড ক্যামেরন গভীর আশা প্রকাশ করে বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাবে।
মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অব্যাহত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি (ক্যামেরন) বলেছেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ অনেক দিনের বন্ধু। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে যে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ডেভিড ক্যামেরনের আমন্ত্রণে গার্ল সামিটে যোগ দিতে তিনদিনের সফরে সোমবার লন্ডন এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাজ্যে এটাই তার প্রথম সফর। সোমবার দুপুরে গার্ল সামিটে যোগ দেয়ার আগেই সকাল সাড়ে আটটা থেকে আধাঘন্টারও বেশি সময় বৈঠক করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, বৈঠক খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে এবং দুই নেতাই খুব ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করেছেন। ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে, এমডিজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে অর্জন এবং প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং সেজন্যই তিনি গার্ল সামিটে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ডেভিড ক্যামেরন গভীর আশা প্রকাশ করে বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তারা বাংরাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাবেন। বৈঠকে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি ক্যামেরন সরকারের আস্থার প্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব। শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি গভীর আস্থার প্রকাশ ঘটেছে। শুধু প্রশংসা করেছেন তা-ই না, সরকারের প্রতি গভীর আস্থা প্রকাশ করেছেন এবং শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন। একইসঙ্গে ক্যামেরন বাংলাদেশ সফরেরও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সিলেটে তিনি যেতে চেয়েছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার অত্যন্ত আন্তরিকভাবে তাকে স্বাগত জানাবে।
বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার জন্য বৈঠকে ক্যামেরনই প্রথম আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে শহীদুল হক জানান, তিনি বলেছেন যে, আমি এটা দেখতে চাই নারীর উন্নয়ন, অব্যাহত ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি এটা আপনারা কিভাবে করলেন আমি সরেজমিনে দেখতে চাই। আমি এটাও দেখতে চাই যে, আপনারা মৌলবাদী শক্তির চ্যালেঞ্জকে কিভাবে মোকাবেলা করছেন। এজন্যও ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ক্যামেরন বলেন,এটা খুব কঠিন চ্যালেঞ্জ, উনি যেটা করে যাচ্ছেন এতদিন ধরে।
দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রী গার্ল সামিটে যোগ দেন। গার্ল সামিটের ভেনুতে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েন এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক আন্থনি লেক।