স্বজন হারানোর বেদনার ঈদ তবুও বলি ঈদ মোবারক
আবদুল আউয়াল ঠাকুর :
ঈদ-উল-ফিতর আনন্দ উৎসবের দিন। এই উৎসব সকলের সাথে ভাগাভাগি করার মত একটি বিষয়। উৎসব আনন্দ ভাগাভাগি করা বা করতে পারার এক ধরনের মানসিক অবস্থা। যে যার অবস্থান থেকে উৎসব পালন করলেও সার্বিক-সামগ্রিক আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। ঈদের কোলাকুলি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং এর মাধ্যমে মনের যে মিলন হয় তা কার্যত নির্ভর করে মানসিক বাস্তবতার উপর। একমাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদ-উল-ফিতর। প্রাসঙ্গিক নানা আলোচনা থাকলেও রমজানের রোজা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই রাখা হয়। আনুষ্ঠানিকতার বিবেচনায় যাই হোক না কেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সারাদেশে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। নতুন পোশাক কেনা, ভ্রমণ করা, ছুটি কাটানো, ভালো খাবারের আয়োজন করা এসবই ঈদ আনন্দের অংশ। বিশ্বাসের দিক থেকে একাত্ববাদিকতাকে ভিত্তি ধরে ঈদ উৎসব হলেও বিশ্বের সব দেশেই একই মেজাজে এই উৎসব পালিত হয় না। বাংলাদেশেও ঈদ উৎসবের একটি নিজস্ব মেজাজ আছে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ঈদের সুনির্দিষ্ট প্রভাব রয়েছে। একথাও সত্যি যে, যথাযথ সতর্কতা অবলম্বিত না হওয়া বা হতে না পারার কারণে আমাদের সংস্কৃতিতে যে নানা ধরনের অপকালচার প্রবেশ করেছে তার প্রভাব থেকে ঈদও বাদ পরেনি।
আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির সংজ্ঞা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের সংমিশ্রণ ও রাজনেতিক প্রভাবে আমাদের সংস্কৃতির স্বরূপ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে এবং চলছে। আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোন ঐক্য না থাকা বা প্রকৃত কোন ধারণা লালন না করায় সংস্কৃতি সম্পর্কে সাধারণের মধ্যেও কোন ঐক্যবদ্ধ ধারণা ও চর্চা গড়ে উঠতে পারেনি। ঐতিহাসিকভাবে একথাই সত্য যে, মুসলমানরাই ভারতবর্ষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং বাংলার ঐক্যবদ্ধরূপ মুসলমানরাই নির্ধারণ করেছিলেন। সে বিবেচনায় সারা ভারতেই মুসলমান সংস্কৃতির একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা রয়েছে। ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে এটাই প্রমাণিত যে, ব্রাহ্মণ্যবাদ, আধিপত্যবাদের বিপরীতে শোষণবিরোধী ইসলামী সাম্যবাদের ধারণাই এ অঞ্চলের জনগণের মূল ধারা। সে অর্থে আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চায়ও এর প্রভাব থাকাই স্বাভাবিক এবং সঙ্গত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ব্রিটিশ শাসনের কারণে মদ্যপ সংস্কৃতি, পাশ্চাত্য ভোগবাদী সংস্কৃতির নানা প্রাদুর্ভাব ঘটেছে এ অঞ্চলে। এর সাথে বহুত্ববাদের সম্পৃক্ততাতো রয়েছেই। সাংস্কৃতিক আলোচনায় আমাদের দেশ এ অঞ্চলের অন্য যে কোন দেশ থেকে খানিকটা আলাদা। প্রাচীন সভ্যতার দেশ চীন। চীনের সংস্কৃতি এখনো তাদের ঐতিহ্যেরই প্রতিফলন ঘটছে। ইরানেও তাদের ঐতিহ্যেরই প্রতিফলন পাওয়া যায়। বৈদিক সংস্কৃতির কারণে ভারতীয়দের নিজস্ব সংস্কৃতি আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হয়েছিল। এরপর বহুত্ববাদী সংস্কৃতির সাথে মিলে যে সংস্কৃতি চালু রয়েছে তার নানা প্রভাব কার্যকর থাকার কারণে আমাদের সংস্কৃতিতেও তার কিছু না কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়ছেই।
ঈদ একত্ববাদী সংস্কৃতির অংশ। ভারতবর্ষের অন্য যে কোন অংশের আলোচনা যাই হোক বাংলার সংস্কৃতি বিনির্মাণে যেসব বৈশিষ্ট্য তার প্রধান ধারা ঈদের সংস্কৃতিতে রয়েছে। বাংলাদেশকে অনেকেই ভারতবর্ষের মদিনা বলে অভিহিত করেছেন। বাস্তবে বর্ণাশ্রয়ী ধর্মের প্রতিভূ প্রচ- জাতিবিদ্বেষী আর্যদের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণের প্রবল আপসহীনতা এবং আরবের সেমিটিক জনগোষ্ঠী ও তাদের একত্ববাদী ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টিও লক্ষণীয়। অনেক সমাজবিজ্ঞানী বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের সাথে সেমিটিক আরবের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। তারা এও মনে করেন, বাংলা শব্দটি আরবী শব্দমালার পরিবর্তিত রূপ। বর্ণাশ্রয়ী আর্যহিন্দুদের জুলুম-নিপীড়নে জর্জরিত মানুষ মুক্তি লাভ করতে ও মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার স্বীকৃতি পেতেই ইসলামের সুশীতল ছায়ার আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। আর্যব্রাহ্মণদের সর্বগ্রাসী আধিপত্যবাদ ও মূলবাসীদের প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই এ অঞ্চলের মুসলমানদের জন্য বিশেষ আবাসভূমি হিসেবে গড়ে উঠেছে। ইতিহাসের নানা পটপরিক্রমায় সর্বশেষ মাৎস্যন্যায়ে এ অঞ্চলে বৌদ্ধদের আর্থিক মেরুদ- এবং তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যবোধ মুছে ফেলার যে অপচেষ্টা হয়েছিল মূলত সেই সূত্র থেকেই নবজাগরণের ধারা নতুনমাত্রা পেতে শুরু করেছে। ১২ শতকের শেষ দশকে মুসলমানরা সারা উত্তর ভারত জয় করেন এবং ১৩ শতকের শুরুতে বিহার ও পশ্চিম বাংলার ব্রাহ্মণ্য শাসনের অবসান ঘটায়। এর একশ’ বছর পর বাংলাদেশে মুসলমান হুকুমত বিস্তৃত হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে তুর্কি বীর ইখতিয়ার উদ্দিন খিলজি বাংলার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাংশে সেন শাসনের অবসান ঘটিয়ে মুসলমান রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ইখতিয়ার উদ্দিন বাংলায় ইসলামকে রাজনৈতিকভাবে বিজয়ী করলেও বঙ্গ বিজয়ের বহু পূর্ব থেকেই বাণিজ্যিক সূত্রে আসা আরব বণিকরা এ দেশে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। বখতিয়ারের বঙ্গ বিজয় বা তার আগে পরে বাংলাদেশে যেসব সুফি-সাধকরা এসেছিলেন তাঁরা বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন। এসব সুফিসাধকদের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচারিত হওয়ায় তার প্রভাব সংস্কৃতিতে ব্যাপকভাবে পড়েছে। ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে এটাই সত্য যে, একদিকে ব্রাহ্মণ্যবাদী-বর্ণবাদী ও আগ্রাসী সংস্কৃতির বিপরীত সংস্কৃতি চর্চার অবিরাম চেষ্টা এবং সেই সাথে রাজনৈতিক আশ্রয়ের যে নতুন সাম্যভিত্তিক সংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল তার সংমিশ্রণে এ দেশের সংস্কৃতিতে নানা পরিবর্তন সাধিত হয়। মূল ধারা বহাল থাকলেও আমাদের সংস্কৃতি দেশীয় ভঙ্গিতেই আপন চরিত্র ধারণ করেছে। ইদানীংকালে আগ্রাসী ব্রাহ্মণ্যবাদী, বর্ণবাদী শক্তির মূল উৎস বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে নানা ফর্মে চাপিয়ে দেয়ার আয়োজন চলছে। ঈদ হচ্ছে প্রকৃত মানবতার জয়গান গাওয়ার এক উন্নত সংস্কৃতি। আর এটাই হচ্ছে আমাদের জাতীয় স্বাতন্ত্র্য রক্ষার প্রতীক। ঈদ সংস্কৃতিতে মুসলমানদের সমবেত হয়ে নামাজ পড়ার যে বিধান রয়েছে সেখানে কোন ভেদাভেদ নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে সুগন্ধি মেখে সঙ্গতি অনুযায়ী নতুন কাপড় বা পরিষ্কার কাপড় পরে এক অন্যের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমবেত হওয়া ঈদ সংস্কৃতির অংশ। নামাজের খুৎবায় প্রকৃতপক্ষে সভ্যতার সংকট ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। আর মোনাজাতের মাধ্যমে নিজের পরিবার, রাষ্ট্র ও উম্মার জন্য সামগ্রিক কল্যাণ কামনা করা হয়।
ইসলামের প্রথম আমল থেকেই ঈদের জামাতের খুৎবার যে নিয়ম প্রচলিত ছিল আজো বিদ্যমান। মহানবী (সা.)-এর মদীনায় আগমনের পর দ্বিতীয় হিজরিতে খুৎবা ও ঈদের নামাজ প্রবর্তিত হয়। রাসূল (সা.) প্রবর্তিত নিয়মবিধি এখন পর্যন্ত বিশ্বময় চালু থাকলেও কার্যত চেতনাগত ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে রমজান শুরু হলেও একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি বিশেষ করে, ইফতারি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে তৎপর হয়ে ওঠে। প্রতিবারই সিন্ডিকেট নিয়ে আলোচনা হয়। এবারও হয়েছে কিন্তু ফলাফল খুব একটা ইতিবাচক তা বলা যাবে না। রোজাদারদের ভোগান্তির অবসান হয়নি। রমজান ইফতারিকে কেন্দ্র করে বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও রাজধানীর যানজট বাড়ে বৈকি কমে না। রমজানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য কার্যত কোন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যায় না। ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকা- সম্পন্ন হয়। পোশাক কেনা থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যেই ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। একশ্রেণীর ব্যবসায়ী রোজাদার বা ঈদ পালনকারীদের জন্য সুলভে পণ্য বিক্রির পরিবর্তে অধিক মুনাফা লাভের আশায় খারাপ পণ্যও বেশি দামে চালিয়ে দেয়। এই মানসিকতা ঈদ চেতনার পরিপন্থী। রমজান আমাদেরকে যে কৃচ্ছতা শেখায় তার গুরুত্ব বর্তমান দুনিয়ায় যে কত ব্যাপক তা বলে বোঝাবার প্রয়োজন নেই। চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের কারণে পাশ্চাত্য দুনিয়ায় এখন যে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে তা রোধে সিদ্ধান্ত নিয়ে কৃচ্ছতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভোগবাদী বিশ্বের এই মানসিকতার বিপরীতে একজন প্রকৃত মুসলমানের কাছে কৃচ্ছতা বা ভারসাম্যমূলক জীবনযাপন নিত্যদিনের বিষয়। অমিতব্যয়িতার জন্য তাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে জবাব দিতে হবে। রমজানের কৃচ্ছতার শিক্ষা এবং তার চেতনা যদি সকলের মধ্যে সঞ্চারিত হতো তাহলে শুধু বাংলাদেশ নয় সারাবিশ্বেই একধরনের বেহেশতি সুখ অনুভব করা যেত। এ বছর যখন পবিত্র ঈদ-উল ফিতর পালিত হচ্ছে তখন কার্যত দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ও মানসিক অবস্থা খুব একটা ভাল নেই। প্রকৃতপক্ষে মূল্যস্ফীতি, মুদ্রাস্ফীতি, হয়রানি, নির্যাতন সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে রেখেছে। পাশাপাশি সরকারের একপেশে দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন কার্যত ঈদ চেতনার অধিকাংশ নাগরিকই অস্বস্তিতে রয়েছেন। ঈদের আগেই মধ্যপ্রচ্যের বিষফোড়া ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা শুরু করেছে। মধ্যপ্রচ্যের প্রভাবশালি মুসলিমদেশগুলো মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছে। স্বজন হারানোর বেদনায় ফিলিস্তিনের মা-বোনদের মত বাংলাদেশের অনেকেই ভাড়াক্রান্ত। সঙ্গতভাবেই এর বিরূপ প্রভাব ঈদ উদযাপনেও পড়তে বাধ্য।
প্রতিবছর ঈদ উদযাপন করলেও আমাদের জীবনে প্রকৃত ত্যাগের কোন প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে এমনটা বোধহয় বলা যাবে না। গোটা বিশ্বে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে বর্তমানে যে বিশৃঙ্খলা চলছে তার পেছনে ইসলাম ও মুসলমানবিরোধী শক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধন ও যোগসাজশ রয়েছে। প্রকৃত কোন ঐক্য না থাকার সুবাদেই এমনটা ঘটছে বা ঘটতে পারছে। ফায়দা লুটছে এমন মহল যারা সর্বতভাবে ভোগবাদী, বহুত্ববাদিতায় বিশ্বাসী। বিশ্ব পরিস্থিতিতে আজ তাই সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা সর্বাগ্রে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে ভোগবাদী, মদ্যপ ও বহুত্ববাদী সংস্কৃতি গিলে খেতে চাইছে একত্ববাদী সংস্কৃতি তথা ইসলামী মূল্যবোধকে। নানা মহল থেকে নানাভাবে ইসলামী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে দেয়াল গড়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আর এই সংস্কৃতি চর্চার সাথে আমাদের রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক থাকার কারণেই বাংলাদেশে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতময় পরিস্থিতির কোন অবসান হচ্ছে না। এবারের যখন ঈদ-উল ফিতর পালিত হচ্ছে তখনও বাংলাদেশে বিপজ্জনক রাজনৈতিক বাস্তবতা বহাল রয়েছে। ঈদের পরে পরিস্থিতি আরো গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। আমরা যেভাবেই ব্যাখ্যা করি না কেন, প্রতিবার সওম পালনে মনের পশু কোরবানির যে প্রকাশ্য ঘোষণা দিচ্ছি বাস্তবে যদি তার প্রতি আমাদের কোন আনুগত্য থাকতো এবং এর মূল চেতনায় যদি আমরা উজ্জীবিত হতে পারতাম তাহলে বাংলাদেশের জনগণ অন্তরে লালন করা আকাক্সক্ষা পূরণের শীর্ষ সোপানে পৌঁছাতে পারতো।
ঈদ কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটা সকলেরই জানা, ঈদ সংস্কৃতি মূলত মানুষকে পরিশুদ্ধ করার জন্য। ধর্মের মূল কাজই হচ্ছে, মানুষের মধ্যে জবাবদিহিতা সৃষ্টি করা, জীবনযাপনে স্বচ্ছতা আনয়ন করা, ত্যাগী মানসিকতা সৃষ্টি করা, প্রকৃত মানবতার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করা এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতিটি সৃষ্টির প্রতি তার নির্দেশিত পন্থায় আচরণ করা। আমাদের জীবনে কোন কোন ক্ষেত্রে ধর্ম কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হওয়ায় ধর্ম পালনের মধ্যদিয়ে যে সুবিধা পাওয়ার সুযোগ ছিল তা পাওয়া যাচ্ছে না। সকলে ঈদের তাৎপর্য অনুধাবন করলেই ঈদ উদযাপনের সার্থকতার পাশাপাশি সমাজের প্রকৃত কল্যাণ সাধন সম্ভব। আর এক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় নেতৃবৃন্দের মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রয়োজন। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনা-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পরিবেশে ঈদ উদযাপিত হোক এই প্রত্যাশা সকলের।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।