ঈদের আনন্দ নেই গাজায়
মধ্যপ্রাচ্যে সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। কিন্তু ইসরাইলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজার ফিলিস্তিনিদের মনে নেই কোনো আনন্দ-উল্লাস। ১৮ দিনের আগ্রাসনে গাজাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১০৫০ ছাড়িয়েছে। ইসরাইল নির্বিচারে হত্যা করেছে শিশু ও নারীদের। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেসামরিক স্থাপনায় অবিরাম গোলা ছুড়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে অসংখ্য ভবন। স্বজন হারিয়ে শোকে পাথর দীর্ঘ দিন ধরে অবরুদ্ধ এই জনপদের মানুষ। তাই ঈদের আনন্দের পরিবর্তে সীমাহীন শোকই এখন তাদের সঙ্গী। এ দিকে গাজায় আরো ২৪ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতি গতকাল রোববার স্থানীয় সময় বেলা ২টা থেকে শুরু হয়েছে। জাতিসঙ্ঘের অনুরোধে ইসরাইল অস্ত্র বিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত নিলেও পরে হামাসের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অজুহাত দেখিয়ে তারা পুনরায় হামলা শুরু করে। এতে ৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাস প্রথমে ২৪ ঘণ্টার অস্ত্র বিরতির সিদ্ধান্ত না মানলেও পরে তারা মেনে চলার ঘোষণা দেয়। গাজায় হামাসের অন্যতম নেতা সামি আবু জুহরি গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, গাজার মানুষের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং ঈদুল ফিতর চলে আসায় আমরা অস্ত্র বিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি। গাজার অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনও এই সিদ্ধান্ত মেনে চলবে বলে জানান তিনি।
শনিবার প্রথম ১২ ঘণ্টার অস্ত্র বিরতি শুরু হওয়ার পর গাজার ফিলিস্তিনিরা ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ উদ্ধার ও দাফনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইসরাইলি আগ্রাসনে কোনো কোনো পরিবারের একজন মানুষও বেঁচে নেই। লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চার দিকে ধ্বংসস্তূপ। ধ্বংসস্তূপ থেকে ইট, সুরকি সরালেই বেরিয়ে আসছে ক্ষতবিক্ষত নারী, শিশু, কিশোর, যুবক ও বয়সী মানুষের লাশ। বাতাসে পচন ধরা লাশের গন্ধে। সন্তানের লাশ হাতে পিতার বুকফাটা আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তাকে সান্ত্বনা দেয়ার কেউ নেই। সবারই এক অবস্থা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গাজার শোকার্ত ফিলিস্তিনিদের সামনে উপস্থিত হয়েছে ঈদুল ফিতর।