গ্রিসে বর্ণবাদি রায়ে বাংলাদেশিদের ওপর অবিচার
গ্রিসে বাংলাদেশি ২৮ শ্রমিককে গুলি করার দায়ে অভিযুক্ত খামার মালিককে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। বুধবার গ্রিসের একটি আদালত এ রায় ঘোষণা করে। গত বছর এপ্রিল মাসে ৬ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গ্রীস প্রবাসি বাংলাদেশি স্ট্রবেরি শ্রমিকরা আন্দোলন করলে তাদের ওপর গুলি চালায় খামারের এক সুপার ভাইজার। ঘটনার পর খামার মালিক ও সুপারভাইজারকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদেরকে নিয়োগে করে খামার মালিকরা। রাষ্ট্রপ অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করলেও ৪০ জনেরও বেশি আইনজীবী তাদের পক্ষে দাঁড়ায়।
মামলাটি চলে দীর্ঘ এক বছর। অতঃপর অভিযুক্তরা নিশঃশর্ত মুক্তি পান। এ ঘটনাটিকে গ্রীসের আদালতের বর্ণবাদি আচরণ বলেই দেখছে বিশ্ব।
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সে সময় গ্রীস দারিদ্র, বেকারত্বে বিপর্যস্ত ছিলো। সারা দেশেই পুঞ্জিভূত হচ্ছিলো ক্ষোভ। বাংলাদেশি শ্রমিকরারও অমানবিক পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছিলো। এর প্রেক্ষিতেই গুলির ঘটনাটি ঘটে।
এ রায় নিয়ে গ্রিসেও তৈরি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। দেশটির মানবাধিকার কর্মী এবং রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, বুধবারের এই রায় গ্রিসের জন্য একটি খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে। এতে বিদেশি শ্রমিকরা ুব্ধ হয়ে উঠতে পারে।
বাদি পরে আইনজীবি মোইসিস কারাবেইদিস বলেন, ‘গ্রিসের জন্য আমি লজ্জিত। আদালত এ ঘৃণ্য সিদ্ধান্তটি নিয়ে নির্যাতিত ব্যক্তির উপর অবিচার করেছে।’
রায় ঘোষণার পরে আদালতের বাইরে গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসীরা বিােভ করেছে।
বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত খামার মালিকের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত অপর ২ জনকে ১৪ বছর সাত মাস এবং আট বছর সাত মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হলেও, আপিল আবেদনের ভিত্তিতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
গ্রিসের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ভাসেলেকি কেট্রিভানো বলেন, ‘এতে অভিবাসি শ্রমিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিতে পারে। তারা মনে করতে পারে, এ দেশে কোনো অন্যায়েরই বিচার হয় না।’
উল্লেখ্য, দেশটির ফলের খামারগুলোতে কাজ করা শ্রমিকদের বেশিরভাগই বিদেশি।