কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার শরণার্থী নীতি
অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক আশ্র্রয়প্রার্থীদের আশ্র্রয় পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। দেশটির নিজস্ব উপকূলে পৌঁছার অনেক আগেই শরণার্থীদের নৌকা আটকে ফেলা হচ্ছে। তাদের আশ্র্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করাসহ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে শ্র্রীলঙ্কা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছতে প্রায় দুই সপ্তাহ লেগে যায়। মাঝে মাঝে সাইকোন ও কয়েক মিটার উঁচু ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে হয়। তবুও শ্র্রীলঙ্কা থেকে আসা ‘নৌকা-শরণার্থী’রা এ ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। পুরনো মরচে ধরা মাছ ধরার মোটরবোটে করে পাড়ি দেন দীর্ঘ পথ।
লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের দণি এশিয়া বিশেষজ্ঞ অ্যালান কিনান এ প্রসঙ্গে বলেন, শ্র্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের পাঁচ বছর পর এখনো তামিল ও সিংহলি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বৈরিতা দূর হয়নি। তারা অস্ট্রেলিয়া চলে যেতে চায়। সিংহলি জনগোষ্ঠীর অনেকে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার আশায় দেশ ত্যাগ করেন। দুই গ্রুপেরই ল্য, ছয় হাজার কিলেমিটার দূরের দেশ অস্ট্রেলিয়া। দেশটি যেন নিরাপত্তা, প্রাচুর্য, বিশালত্ব ও উন্নত জীবনের হাতছানি দেয়। যেখানে কলম্বোর কোনো বস্তিতে এক কামরার কুঁড়ে ঘরে তিনজন মানুষ বাস করেন, সেখানে অস্ট্রেলিয়ায় এক বর্গকিলোমিটারে বাস করেন তিনজন।’
এ বিশালত্ব সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার রণশীল সরকার দেশটির দ্বার রুদ্ধ করে রাখতে চায়। ‘স্টপ দ্য বোটস’ বা ‘নৌকা থামাও’ স্লোগান তুলে ‘লিবারেল পার্টি অব অস্ট্রেলিয়া’র রণশীল রাজনীতিবিদ টনি অ্যাবোট গত সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী হন। নয় মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছে এ সরকার। গত সাত মাসে একটিও শরণার্থী নৌকা অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে পৌঁছতে পারেনি।
সরকারি আর্থিক সহায়তায় চলা অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জিলিয়ান ট্রিগস মন্তব্য করেন, ‘রাজনৈতিক আশ্র্রয়প্রার্থীরা উঁচু মাত্রায় রাজনৈতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছেন। কিছুদিন আগে উপকূলরা বাহিনী অস্ট্রেলিয়ার কয়েক শ’ কিলোমিটার দূরে ৪১ জন মানুষ বোঝাই একটি নৌকা থামিয়ে দেয়। শরণার্থীরা রাজনৈতিক আশ্র্রয় প্রার্থনা করলে ভিডিওর মাধ্যমে তাদের সাাৎকার নেয়ার পর তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। এরপর তাদের শ্র্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর হাতে সঁপে দেয়া হয়।