দেউলিয়া হওয়ার পথে বিশ্বের ১১ দেশ
ঋণদাতাদের সাথে কয়েক বছরের আইনী লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ঋণখেলাপীতে পরিণত হয়েছে আর্জেন্টিনা। রেটিং সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’স জানিয়েছে, ২০০১ সালে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর ঋণদাতাদের সাথে আলোচনা শুরু করে আর্জেন্টিনা।
গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ নিয়ে দেশটির সাথে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ঋণদাতাদের। কিন্তু সেই আলোচনা ব্যর্থ হয়।
তবে আর্জেন্টিনাই শুধু একমাত্র ঋণখেলাপী দেশ নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই তালিকায় যোগ হয়েছে আরো একাধিক দেশ।
রেটিং সংস্থা মুডি’স জানিয়েছে, আর্জেন্টিনা ছাড়াও আরো দশটি দেশ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এর মধ্যে ইউরোপের দেশ যেমন আছে তেমনি আছে এশিয়ার দেশও।
ইউরোপেরে দেশ গ্রীস ও ইউক্রেন যেমন দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে তেমনি একই অবস্থা পাকিস্তান, ইকুয়েডর, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলা ও বেলিজের। তালিকায় আছে জ্যামাইকা এবং সম্প্রতি সেনা শাসনে যাওয়া দেশ মিশর।
তবে সম্প্রতি বেলিজ ও ইকুয়েডরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে রেটিংয়েও এগুচ্ছে তারা।
কোনো দেশের বৈদেশিক ঋণ যদি তার জিডিপির ১২০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে সেই দেশটির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
আইএমএফের হিসেবে, গ্রিসের ঋণের পরিমাণ চলতি বছর শেষে তাদের জিডিপির ১৭৫ শতাংশের বেশি হবে।
পৃথিবীতে জাপান ছাড়া আর কোনো দেশের এতো বেশি ঋণ নেই।
তবে জিডিপির অনুপাতে অনেক কম ঋণ নিয়েও কোনো কোনো দেশের দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন, ইকুয়েডর-তার ঋণ জিডিপির মাত্র ২৪.৮ শতাংশ। তবে তার সমস্যা হলো আন্তর্জাতিক বন্ড মার্কেটে তার উপস্থিতি খুবই কম।
কোনো দেশের ক্রেডিট রেটিং যদি খারাপ হয় তাহলে ঋণ পেতে তাকে উচ্চ সুদ দিতে হয়। ঋণ পরিশোধে অনিশ্চয়তার কারণে কেউ তাকে ঋণ দিতে আগ্রহী হয় না। আবার ঝুঁকি নিয়ে দিলেও চড়া সুদ আদায় করে থাকে।
যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ বছর মেয়াদী ট্রেজারি নোটের বার্ষিক সুদের হার মাত্র ২.৫ শতাংশ। একই ধরণের বন্ডে জামাইকাকে বছরে সুদ গুনতে হয় ৭.৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১২ সালে দেউলিয়া হওয়ার আগে গ্রিসে ১০ বছর মেয়াদী বন্ডের সুদের হার ছিল ২৯ শতাংশ।
কয়েকটি দেশের দুর্বল ক্রেডিট রেটিংয়ের কারণ উচ্চ মূল্যস্ফীতি।
যেমন ভেনিজুয়েলায় চলতি বছর মূল্যস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে আইএমএফ।