টাওয়ার হ্যামলেটস টাউন হলে ফিলিস্তিনি পতাকা
গাজায় ইসরায়েলি নির্মম ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল। টাউন হলে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে এই সংহতি জানানো হয়।
এদিকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের এমন অভিনব সংহতি প্রকাশে ব্রিটেন জুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মুলধারায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া গুলো পক্ষে বিপক্ষে ফলাও করে সংবাদ প্রচার করছে। গাজায় অব্যাহত ইসরাইলী হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের সর্বত্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সারা বিশ্বের মুসলিম অমুসলিম মানবতাবাদী সকল নাগরিক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সোচ্চার। লন্ডনে গত সপ্তাহে হাজার হাজার নারী পুরুষ ইসরায়েল হাইকমিশন ঘেরাও করে গাজার হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ এমপি ডেভিড ওয়ার্ড গাজায় হামলার বিরুদ্ধে টুইটারে বার্তায় বলেছেন ‘আমি যদি গাজায় বাস করতাম তাহলে আমিও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রকেট ছুড়তাম’। অবশ্য তার এই বার্তায় নানা প্রতিক্রিয়া শুরু হলে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বাধ্য হন এই লিবডেম এমপি।
ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের ক্রিকেটার মঈন আলী ফিলিস্তিনের পক্ষ সমর্থন করে ‘সেইভ ফিলিস্তিন’এবং ‘সেইভ গাজা‘ লেখা রিস্ট ব্যান্ড পরে খেলতে নামলে আইসিসি খেলা চলাকালীন তার এই রিষ্ট ব্যান্ড পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
টাউন হলে পতাকা উত্তোলনের ব্যাপারে মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, মানবিক কারণে আমরা গাজার মানুষের সাথে সংহতির প্রকাশ হিসেবে টাউন হলে ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করছি। এছাড়া কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলা বন্ধে একটি জরুরী প্রস্তাব গৃহীত হয়। গৃহীত প্রস্তাবে নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বন্দ্বের সমাধানের উদাহরণ টেনে বলা হয়, দীর্ঘস্থায়ী ও ফলপ্রসু সমাধানের জন্য সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনা প্রয়োজন।
গত বুধবারের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় সব দলের কাউন্সিলাররা ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার নিন্দা জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক যুদ্ধ বন্ধের আহবানের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। এই হত্যাযজ্ঞ উভয় পক্ষের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ আরও বাড়াবে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়। সভায় প্রভাব খাটিয়ে ও নর্দান আয়ারল্যান্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সংঘাতেরও একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে, লেবার ও কনজারভেটিভ পার্টি, মানবতাবাদী সংগঠন এবং ইহুদী কমিউনিটি টাউন হলে লুৎফুর রহমানের ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। অনেকে বলছেন এতে করে এককভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ অবলম্বন করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ মেয়রের পতাকা উড়ানোর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আর লুৎফুর রহমানের সমর্থকরা এটাকে লুৎফুর রহমানের মুসলমানদের প্রতি মহানুভবতা ও ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সহানুভূতি হিসেবেই দেখছেন।