চীনে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০০
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ইউনান প্রদেশে গত রবিবারের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারশ’ জনের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে প্রায় দুই হাজারের মতো মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধির আশংকার মধ্যেই সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সেখানে নিবিড় উদ্ধার তত্পরতা চলছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বিভিন্ন খবরে ১৪ বছরের মধ্যে ঐ প্রদেশে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাথমিকভাবে নিহত শ’খানেকের বেশি বলা হলেও এ সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ১৫০ এবং পরে ১৭৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তা বেড়ে ৩৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৮৮১ জন। এদিকে, ভূমিকম্পে ১২ হাজার বাড়ি-ঘর ধ্বংস ও ৩০ হাজার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকার বিদ্যুত্ সরবরাহ বন্ধের পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। চীনের সরকারি কর্মকর্তারা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং দুর্গত এলাকায় অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সহায়তার জন্য ইউনান প্রদেশে আড়াই হাজার সেনা পাঠিয়েছে চীনা সরকার। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তবে ভূমিকম্পের পর ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের। সিনহুয়া জানিয়েছে, উদ্ধার ও ত্রাণ তত্পরতা তদারক করতে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুই হাজার তাঁবু, তিন হাজার বিছানা, তিন হাজার কম্বল ও তিন হাজার কোট পাঠানো হয়েছে। তবে এ সাহায্য পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছে উদ্ধারকর্মীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, রবিবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ইউনান প্রদেশে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। তবে সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৫। এর আগে ১৯৭০ সালে একই এলাকায় ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১৫ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছিল। এছাড়া ২০০৪ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্পে ১০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।