পদত্যাগপত্রে ওয়ার্সি যা বললেন
যুক্তরাজ্যে ক্যামেরন সরকারের মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের পরিবর্তনের এক সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় ইসরাইলের সেনা অভিযান নিয়ে সরকারের অবস্থানে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিমন্ত্রী সাইয়েদা হুসেইন ওয়ার্সি।
পরিস্থিতি নিয়ে নিজের ‘গভীর অনুতাপের’ কারণে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন বলে নিজের টুইটার পাতায় উল্লেখ করেন তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কাছে দেয়া তার পদত্যাগপত্রটির মূল অংশ তুলে ধরা হলো :
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী,
কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন বৈঠক ও আলোচনায় আমি গাজা পরিস্থিতি এবং এ নিয়ে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে আমার খোলামেলা ও স্পষ্ট কথাগুলো বলেছি।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রচেষ্টায় ব্রিটেনের সাধারণ নীতি অনুযায়ী আমার মতামতগুলো ছিল। কিন্তু অতিসম্প্রতি গাজা সঙ্কট নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সুর ছিল নৈতিকভাবে আপসকামী/পক্ষপাতমূলক, যা ব্রিটেনের জাতীয় স্বার্থের অনুকূলে নয়, বিশ্বব্যাপী আমাদের সুনাম এমনকি দেশের অভ্যন্তরেও এর একটা ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, মানবাধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, গাজায় বর্তমান সঙ্কটের ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না। বিশেষ করে আইনের শাসনের বিষয়ে আমাদের যে অঙ্গীকার, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের প্রতি আমাদের যে সমর্থন তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
গত কয়েক সপ্তাহে কেন ক্লার্ক এবং ডমিনিক গ্রিয়েভের মতো দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ সহকর্মীদের অনুপস্থিতি বেশ সুস্পষ্ট হয়েছে।
[গ্রিয়েভ ছিলেন ক্যামেরন সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা যিনি মানবাধিকার বিষয়ে বেশ সোচ্চার ছিলেন। কিছুদিন আগে করা মন্ত্রিসভার সংস্কারের সময় সরানো হয় আরেকমন্ত্রী কেন ক্লার্ককেও।]
পদত্যাগ পত্রের এক পর্যায়ে নিজের কিছু সতীর্থের প্রশংসা করেন ওয়ার্সি।
যা হোক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সংঘাত নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক এবং গাজা পরিস্থিতির বিষয়ে আমাদের অবস্থান উগ্রপন্থার একটা কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে যার প্রভাব আমাদের ওপর পড়তে পারে।
পার্টির নেতা এরিক ও উইলিয়ামের কাছ থেকে আমি সমঝোতার কৌশল শিখেছি। প্রয়োগবাদ ও বাস্তববাদের সঙ্গে আদর্শবাদের সমন্বয় শিখেছি।
তবে আমি সব সময় বলেছি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনে নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও সমর্থনের বিষয়গুলো রাজনৈতিক জীবনের পরেও আমার ওপর প্রভাব ফেলবে। সে কারণে আজকে পদত্যাগপত্র দেয়াটা আমার জন্য অত্যন্ত বেদনার।
ব্রিটেনে উদ্ভুত সব সমস্যার মোকাবেলায় দল যদি সফল হয় এবং আজকের ব্রিটেনে বসবাসরত সব সমপ্রদায়ের প্রতি তারা যদি দায়িত্বশীল হয় তবে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে আমি আমি আমার সমর্থন অব্যাহত রাখবো।
—সাইয়েদা ওয়ার্সি