জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আলোচনায় বাংলাদেশ

গণহত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত

UNশহীদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের জাতিসংঘের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ফিলিস্তিনের গাজার পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের ৫০টির মত সদস্য রাষ্ট্র এতে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় আরো অংশ নেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, সাধারণ পরিষদের সভাপতি জন এ্যাশ, ইউএন হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস নাভী পিল্লাই, ইউএন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভেলরী আমুস ও গাজায় অবস্থানরত ইউএনডিপির কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ।
আলোচনায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় মানবিক বিপর্যয়ে বিশ্ব নেতৃত্বের ব্যর্থতার অভিযোগ না আনলেও উদাসীনতার কথা স্পষ্ট করে বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৮৫০ ফিলিস্তিনি এবং তিনজন ইসরায়েলি সিভিলিয়ান নিহত হওয়ার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক, অমানবিক এবং যুদ্ধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন ও জেনেভা কনভেনশনবিরোধী। এভাবে নির্বিচারে নারী, শিশু ও বেসামরিক সাধারণ মানুষ হত্যা সভ্যতাবিরোধীও বটে। কোনো অজুহাতেই ইসরায়েল গাজায় সুসজ্জিত সামরিক আক্রমণের দায় এড়াতে পারে না।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল মোমেন আরো বলেন, ‘আমাদের আজ এক হৃদয় ভারাক্রান্ত মনে এখানে কথা বলতে হচ্ছে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক আন্তর্জাতিক সকল বিধিনিষেধ অমান্য করে ফিলিস্তিনিদের ওপর অমানবিক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘ নির্মম এই হত্যাযজ্ঞ ও আগ্রাসী তৎপরতাকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করে সময় উপযুক্ত কাজ করেছে। এ কারণে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের জাতিসংঘের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত বলে তিনি দাবি করেন। তিনি ফিলিস্তিদিনের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও অকুণ্ঠ সমর্থন পূনর্ব্যক্ত করেন।
ড. আব্দুল মোমেন তার বক্তব্যে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিরাপত্তা পরিষদ ও বিশ্ব নেতৃত্বকে জোর অনুরোধ জানান। কারণ দরিদ্র ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের এবং একইসঙ্গে ইসরাইলিদের সমভাবে, স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে বাঁচার অধিকার রয়েছে। বিশ্বজনমত কখনোই কোন ধরনের আগ্রাসী তৎপরতা সমর্থন করে না। যা ইসরায়েল গাজার ওপর চালিয়ে যাচ্ছিল। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে নিরাপত্তা পরিষদ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে যাতে করে ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইন দুটি স্বাধীন দেশ হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে। এতে জাতিসংঘের প্রতি বিশ্ববাসীর বিশ্বাস ও আস্থা দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button