ব্রিটিশদের ক্ষণিক সুখের সমীকরণ !

‘ক্ষণিক সুখের সমীকরণে’ মূল হিসাবটা করা হয় প্রত্যাশা, পুরস্কার এবং অতীত ফল পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে।সুখ যে মাপা যায় না কিংবা তা যে কোনো একক বিষয় নয়; বরং তা জীবনের নানা পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল, আমরা সবাই কম-বেশি জানি। কিন্তু ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, অন্তত একটা নির্দিষ্ট সময়ের হিসাবে হলেও সুখ মাপার একটা সহজ সমীকরণ আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে জানিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ যতটা আশা করে তার চেয়ে ভালো ফল পেলে সবচেয়ে বেশি সুখী হয় তারা। ‘ঝুঁকি ও পুরস্কার’ নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এ প্রবণতার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া মস্তিষ্কের স্ক্যানে দেখা গেছে, সাধারণভাবে মানুষের ‘ভালো থাকা’র প্রতিফলন ঘটে, মস্তিষ্কের এমন অংশগুলো একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পর্কিত।
ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের প্রস্তাবিত একটা নির্দিষ্ট সময়ের সুখ মাপার কৌশল বা এই ‘ক্ষণিক সুখের সমীকরণ’ এবং এ-সংক্রান্ত গবেষণা সম্প্রতি পিএনএসএস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। এই সমীকরণে মূল হিসাবটা করা হয় প্রত্যাশা, পুরস্কার এবং অতীত ফল পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের গবেষক ডক্টর রোব রুটলেজ বলেন, ‘আমরা অতীতের সিদ্ধান্ত এবং ফলাফল দেখে অনুমান করতে পারি যে, একটা সময়ে আপনি নিজেকে ঠিক কতটা সুখী ভাববেন।’
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান রচয়িতা রুটলেজ বিবিসি নিউজকে বলেন, ‘মস্তিষ্ক বের করার চেষ্টা করে যে পুরস্কারের প্রত্যাশায় দুনিয়ায় আপনি কী করতে পারেন। তাই সব সিদ্ধান্ত, প্রত্যাশা এবং ফলাফল সবই হলো এমন তথ্য, যা কাজে লাগিয়ে মস্তিষ্ক চেষ্টা করতে থাকে যে, ভবিষ্যতে যাতে আপনি ভালো সিদ্ধান্ত নেন। আর সব সাম্প্রতিক প্রত্যাশা এবং পুরস্কার মিলেমিশেই আপনার বর্তমান সময়ের সুখ নির্ধারিত হয়।’
পরিস্থিতিটা আসলে এমন যে, ধরুন আপনি একটা রেস্তোরাঁয় খেতে যাবেন। খাবারটা যদি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়, তাহলে খাওয়ার অভিজ্ঞতা ভালো হবে। কিন্তু আগেই খাবারের মান সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করলে খেতে যাওয়ার আগে থেকেই আপনার মধ্যে একটা সুখী সুখী অনুভূতি কাজ করতে শুরু করতে পারে। তবে, খাবার ভালো না হলে সেটা নষ্ট হয়ে যাবে।
গবেষকদের প্রস্তাবিত ক্ষণিক সুখের সমীকরণের গাণিতিক সূত্রটি ১৮ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের স্মার্টফোনে ‘ঝুঁকি ও পুরস্কার’ নীতির একটা গেম খেলতে দেওয়া হয়। ‘দ্য গ্রেট ব্রেইন এক্সপেরিমেন্ট অ্যাপ’ নামের এই অ্যাপ্লিকেশনটি ইতিমধ্যেই বুদ্ধিবৃত্তিক আচরণ পর্যালোচনায় যথেষ্টই সুনাম কুড়িয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button