৩৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী পরিষদের (একনেক) বৈঠকে ৩৭ হাজার ৩৩৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশে এ যাবতকালের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ইতিহাসে এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে বেশি মূল্যের প্রকল্প। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকে জনান হয়, অনুমোদন দেয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে,৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকার “মাতারবাড়ি ৬০০ মেঘাওয়াট করে দুটি প্রকল্পে ১২০০ মেগ্ওায়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প ’ এবং অপর দুটিসহ মোট পাঁচ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৩ ৩৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
সভায় অনুমোদন দেয়া অপর প্রকল্পগুলো হচ্ছে হাওর অঞ্চলের বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্প, যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি) স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এবং হাতে কলমে কারিগরি প্রশিক্ষণে মহিলাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বিটাকের কার্যক্রম সম্প্রসারণপূর্বক আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘একনেক’ পাস হওয়া ৫টি প্রকল্প নিয়ে সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিং করেন।
মন্ত্রী জানান,পাসকৃত ৫টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি নতুন এবং ৩টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা সরকারি অর্থায়নে, ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে এবং ২৯ হাজার ৫৩৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে।
তিনি জানান, ‘মাতারবাড়ির আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প’ শীর্ষক দুটি ৬০০ মঘাওয়াট করে ১২০০ মেঘাওয়াটের প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা সবচেয়ে বেশি অর্থের যোগান দেবে। জাইকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকা দেবে। এছাড়া সরকারি খাত থেকে ৪ হাজার ৯২৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা এবং বাকি ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএস) কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে জুলাই ২০১৪ হতে জুন ২০২৩ মেয়াদে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মূল্যমানের এ উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
বিফ্রিংয়ে বলা হয়, প্রকল্পের বছর ভিত্তিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬৪৫ কোটি ৫০ লাখ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১০৪ কোটি ২৬ লাখ, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২৯৪১ কোটি ৪০ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫৮২৮ কোটি ১৮ লাখ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৪৮৬ কোটি ৬৬ লাখ, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৩৭৫৯ কোটি ২ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৬৬১ কোটি ৫২ লাখ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৯৬৭ কোটি ৫২ লাখ, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৬৫৯০ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান ২০১০ অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের শতকরা ৫০ ভাগ বিদ্যুৎ কয়লা থেকে উৎপাদন করা হবে।
এ পরিকল্পনা অনুযায়ী মাতারবাড়িতে ২দ্ধ৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। সভায় জানানো হয় মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। এ কেন্দ্রের কর্মদক্ষতা হবে ৪১.৯৯ ভাগ, যা বর্তমানে বাংলাদেশের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গড় কর্মদতা শতকরা ৩৪ ভাগ থেকে অনেক বেশি। এেেত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গড় কর্মদতা ৩৬% থেকেও বেশি।
সভায় আরো জানানো হয় মাতারবাড়ি ২ টি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে প্রথম কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে প্রথম কয়লাভিত্তিক আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যেখানে কুলিং এবং স্টিম জেনারেশনের জন্য সমুদ্রের সারফেস ওয়াটার ব্যবহার করা হবে।
সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ,ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। -সূত্র : বাসস।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button