রানা প্লাজা ধসের মামলা
১৫ মাসেও দাখিল হয়নি অভিযোগপত্র
সাভারের রানাপ্লাজা ধসের ১৫ মাসেও দাখিল হয়নি মামলার অভিযোগপত্র। বুধবার মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত সংস্থা থেকে কোনো প্রতিবেদন না আসায় ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শহীদুল ইসলাম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ফের দিন ধার্য করেন।
মামলা দুটিতে জামিনে থাকা ৭ আসামি— সাভার পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র ও সাভার পৌর বিএনপির সভাপতি রেফাতউল্লাহ, সোহেল রানাকে যশোরে আত্মগোপনে থাকতে সহায়তাকারী অনিল দাস, শাহ আলম ও আবুল হাসান, রানা প্লাজার অনুমোদন ও নির্মাণ-প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে থাকা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এমতেমাম হোসেন, রানা প্লাজার নকশা অনুমোদনের জন্য সুপারিশকারী সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ও পৌরসভা যুবদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খান ও সাভার পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান আদালতে হাজিরা দেন। মামলা দুটিতে কারাগারে থাকা সোহেল রানাসহ ৮ আসামিকে কারগার থেকে আদালতে আনা হলেও তাদের এজলাসে নিয়ে আসা হয়নি।
প্রসঙ্গত, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় গত বছরের ২৫ এপ্রিল সাভার থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। একটি হলো অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে পুলিশের হত্যা মামলা। অপরটি হলো ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের ইমারত আইনে দায়ের করা মামলা।
হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আবদুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, মোহাম্মদ আলী খান, রেফাত উল্লাহ, আবুল হাসান, অনিল কুমার দাস, শাহ আলম মিঠু, এমায়েত হোসেন, রাকিবুল ইসলাম ও আলম মিয়া জামিনে রয়েছেন। এ ছাড়া বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান, সোহেল রানা, আমিনুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক খান, আলমগীর, রাসেল মধু, সরোয়ার ও আবুবকর সিদ্দিক কারাগারে রয়েছেন।
একই দিনে ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ১৩ জনকে আসামি করে সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামিদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী খান, এমায়েত হোসেন, আবদুল খালেক, রেফাত উল্লাহ, বজলুল সামাদ আদনান, মাহমুদুর রহমান জামিনে রয়েছেন। এ ছাড়া সোহেল রানা, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও সরোয়ার কামাল কারাগারে আটক রয়েছে। আসামিদের মধ্যে শাহ আলম মিঠু, অনিল কুমার দাস ও আবুল হাসান ভবন মালিক রানাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত বছরের ২৪ এপ্রিল সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। এ সময় ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে ৫ হাজার পোশাকশ্রমিক। এ ঘটনায় ১১৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মোট ৫টি মামলা হয়। যার মধ্যে তিনটি ভবনধসের ঘটনায়। অপর দুই মামলা অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে শুধু সোহেল রানার বিরুদ্ধে। ভবন ধসের মামলাগুলোর মধ্যে নিহত শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী হত্যার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন । ভবন ধ্বসের ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।