ফিলিস্তিনিদের অকৃত্রিম বন্ধু জর্জ গ্যালোওয়ে
ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্টার সংগ্রামে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে যারা অত্যন্ত সরব জর্জ গ্যালোওয়ে তাদের একজন। অসাধারন সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারি তুখোর এই পার্লামেন্টেরিয়ান ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতি বছর পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন।
জর্জ গ্যালোওয়ের জন্ম ১৯৫৪ সালের ১৬ আগস্ট। তিনি ছিলেন লেবার পার্টির একজন প্রভাবশালী নেতা। ইরাক যুদ্ধের সময় বৃটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির ভুমিকার তীব্র সমালোচনা করলে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
এরপর তিনি ২০০৪ সালে রেসপেক্ট পার্টি নামে দল গঠন করেন। ২০১০ সালে নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেও ২০১২ সালে ব্র্যাডফোর্ড ওয়েস্ট থেকে উপ নির্বাচনে বিজয়ী হন।
জর্জ গ্যালোওয়ে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনের একজন জোরালো সমর্থক। ২০০৬ সালে নির্বাচনে ফিলিস্তিনে ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। ২০০৯ ফিলিস্তিন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া জর্জগ্যালোওয়েকে ফিলিস্তিনের পাসপোর্ট তুলে দেন।
২০০৮ সালে গাজায় ইসরাইলি হামলা চালালে তার প্রতিবাদে সোচ্চার হন জর্জ গ্যালোওয়ে। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ১ মিলিয়ন ডলারের ত্রান সামগ্রীসহ একটি কনভয় নিয়ে তিনি গাজা যান।১২০ টির বেশি পরিবহনে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে তিনি বেলজিয়াম,ফ্রান্স,স্পেন, মরোক্ক, আলজেরিয়া, লিবিয়া এবং মিশর হয়ে গাজায় যান। এর আগে তিনি ২০০৬ সালে এক সমাবেশে বলেছিলেন হিজবুল্লাহকে কোনো ভাবেই সন্ত্রাসী সংগঠন বলা যায় না।
সম্প্রতি তার নির্বাচনী এলাকাকে ইসরাইল ফ্রি জোন ঘোষনা করায় তাকে নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। তার এই ঘোষনার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। বৃটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এ খবর দিয়েছে।
গ্যালোওয়ে তার নেতাকর্মীদের ইসরাইলের পন্য , সেবা এবং একাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন এখন থেকে ব্র্যাডফোর্ড ইসরাইল মুক্ত এলাকা। এখানে কোনো প্রকার ইসরাইলি পন্য পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন আমরা ইসরাইলের কোনো সেবা চাই না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ গুলোতে কোনো ইসরাইলি শিক্ষককেও চাই না। তিনি আরো বলেন ব্রাডফোর্ডে ইসরাইলি পর্যটকরা আসুক তা আমরা চাই না। তারা এখানে কাজ করুক সেটাও আমাদের কাম্য নয়। ইসরাইল একটি অবৈধ এবং বর্বর রাষ্ট্র।
গ্যালোওয়ের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে পশ্চিম ইয়র্ক শায়ার পুলিশের একজন মুখপাত্র বৃটিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে বলেছেন ২ আগস্টের একটি জনসভায় তার বক্তব্য নিয়ে দুটো অভিযোগ এসেছে। আমরা এখন বিষয়টি তদন্ত করছি।
২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ইসরাইল বিরোধী এক সমাবেশে বলেন আমরা ইহুদিদের ঘৃনা করিনা। আমরা ঘৃনা করি ইহুদিবাদ ও ইসরাইলকে। তিনি বলেন ইহুদি রাষ্ট্রের ধারনা ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তওরাতের চেতনার পরিপন্থী।
জর্জগ্যালোওয়েকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অক্্রফোর্ড ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে এক বির্তক প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর তিনি জানতে পারেন তার সাথে বিতর্কে অংশ নেবেন একজন ইসরাইলি নাগরিক। তার পরিচয় জানার পর এই বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকার করে তিনি জানান আমি ইসরাইলকে স্বীকার করিনা। ইসরাইলের সাথে বিতর্কেও যেতে চাই না।