গাজায় দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি কার্যকর
মিসরের মধ্যস্থতায় গাজায় দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। কায়রোর সংবাদ মাধ্যম মিনা জানায়, দুপক্ষের সম্মতিতে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার শর্ত থাকায় হামাস এই যুদ্ধবিরতিকে তাদের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এদিকে চুক্তি অনুযায়ী গাজায় অবরোধ শিথিল করতে রাজি হয়েছে ইসরাইল। যাতে করে ত্রাণ সরবরাহ এবং নির্মাণ সামগ্রী ফিলিস্তিনের ওই অংশে ঢুকতে পারে।
এই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে উভয়পক্ষকে শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার সকালের দিকে গাজায় দুটি বহুতল ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েলের জঙ্গি বিমান। ফ্ল্যাট এবং অফিস সংবলিত বাসা টাওয়ার ইসরাইলের হামলায় ধুলোয় মিশে যায় এবং বাড়ি, দোকান, কার্যালয় থাকা ইটালিয়ান কমপ্লেঙ ইসরাইলের হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইসরায়েলের পূর্ব সতর্কবাণীতে অধিবাসীরা ভবনটি থেকে অন্যত্র যাওয়ায় নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
গত ৮ জুলাই থেকে গাজায় ইসরাইলের অপারেশন প্রক্টেকটিভ নামের আগ্রাসনে প্রাণ হারায় ২ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি। ইসরাইলি বিমান হামলা আর গোলা নিক্ষেপে গুড়িয়ে গেছে প্রায় পুরো গাজা। অন্যদিকে গাজা থেকে ছোড়া রকেটে নিহত হয়েছে ৬৪ ইসরাইলি।
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যা রয়েছে
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, গাজার অবরোধ শিথিল করা হচ্ছে, সাগরে ফিলিস্তিনি জেলেদের মাছ ধরার এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার হামাসের দাবি নিয়ে আগামী মাসে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া বন্দি বিনিময় প্রশ্নও পরে আলোচিত হবে।
আলজাজিরার অ্যান্ড্রু সিমন্স গাজা থেকে বলেন, চুক্তিতে অবিলম্বে গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। এছাড়া সাগরে মাছ ধরার ওপর বিধিনিষেধ ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। বর্তমানে মাছ ধরা এলাকা ছয় মাইল থেকে বেড়ে ১২ মাইল হবে।
তিনি বলেন, ‘অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যবে।
চুক্তি সাক্ষরের পর এক হামাস নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের সমুদ্র ও বিমানবন্দর নির্মাণ করতে যাচ্ছি। তারা যদি আক্রমণ করতে চায়, তবে তা করতে পারে। তবে আমাদের বিমানবন্দরে কেউ আক্রমণ করলে, তাদের বিমানবন্দরও আক্রান্ত হবে।
এছাড়া ইসলামি জিহাদের এক নেতা বলেছেন, গাজাকে নিরস্ত্রীকরণের যে দাবির প্রতি ইসরাইল এতদিন অনড় ছিল, চুক্তিতে সে ব্যাপারে কিছু উল্লেখ নেই।