ইতালিতে বাংলাদেশীকে কুপিয়ে হত্যা

জমির হোসেন ইতালি থেকে: ইতালির সিসিলি রাগুসায় রোমের কয়েকজন নাগরিক টিপু সুলতান নামের এক বাংলাদেশীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। নিহত টিপুর বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার গোয়ারি ভাঙা গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুর রহমান। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল চার নম্বর। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নিহত টিপুর তার চাচা মোহাম্মদ আবদুর রহিমের সঙ্গে একটি কৃষি প্রকল্পে কাজ করতেন। সেখানে বাংলাদেশী ছাড়াও ভারতীয়, রুমানিয়ান এবং অন্যান্য দেশের মানুষ কাজ করেন। প্রকল্পের মালিক বাতানিয়া বাংলাদেশীদের কাজ পছন্দ করতেন। ৯ মাস আগে প্রকল্পে রুমানিয়ানদের সঙ্গে একটি দুর্ঘটনা ঘটে যা নিহত টিপু জানতেন না। ওই ঘটনার পর ৯ মাস রুমানিয়ানরা কাজে আসেনি। ৪ মাস আগে টিপু সিসিলিতে এসে কৃষি কাজে যোগ দেন। পূর্বশত্র“তার জের ধরে ৯ মাস পর ৮-৯ জনের একটি দল এসে টিপুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। স্থানীয় সময় তখন বিকাল ৪টা। টিপুর সহকর্মী (বন্ধু) জনি হক বলেন, ঘটনার দিন তিনি কাজে যাননি। বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশের গাড়ির আওয়াজে তার ঘুম ভেঙে গেলে কাজের স্থানে গিয়ে দেখেন একটি রক্ত মাখা লাশ। প্রকল্পের মালিক বাতানিয়া তাকে ডেকে বলেন দেখ কারা যেন টিপুকে মেরে ফেলেছে। ঘটনাস্থলে ডাক্তার এসে টিপুকে মৃত বলে ঘোষণা দেন। চারদিকে হৈচৈ পড়ে যায়। বাতানিয়া ও টিপুর বন্ধুরা পুলিশের কাছে বলেন, টিপু অনেক ভালো ছেলে ছিল। কোনো ধরনের খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে ৭/৮ মাস আগে দেশে যায়। ইতালিতে
ফিরে আসার ৭-৮ দিন আগে বিয়ে করে। তাদের ধারণা কাজ নিয়ে রুমানীয়দের সঙ্গে তার শত্র“তা সৃষ্টি হয়। যার ফলে টিপুকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন সরকার ও প্রশাসনের কাছে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে টিপু হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি রুমানিয়ান নাগরিক ইউলিয়ান এবং তার বাবাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে যে, টিপু হত্যার সঙ্গে তারা জড়িত। এর আগেও কয়েকবার ইউলিয়ানসহ ৫/৬ জন বাংলাদেশীদের বাসায় ঢুকে সবাইকে মারধর করে চলে যায়। এ ঘটনা মালিককে জানানোর পর তিনি বলেন, রুমানিয়ান কর্মীদের কাজ থেকে বাদ দিয়ে বাঙালি কর্মীদের কাজে রাখবেন।
বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার ব্যাপরে দূতাবাসের কাউন্সিলর রুবায়াত-ই আশিক বলেন, আমরা ইতালিয়ান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পুলিশ আসল রহস্য খুঁজে বের করে প্রকৃত খুনিকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করবে। পুলিশ আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করলে অ্যাম্বাসি কর্তৃক লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাতহ থাকবে। এ ব্যাপারে টিপু সুলতানের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দূতাবাসের যোগাযোগ হয়েছে বলে জানান কাউন্সিলর আশিক।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button