দেশের ১৮ ভাগ এলাকা পানির নীচে

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল আর ভারতের বন্যার পানি অবাধে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ায় বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে দেশের ১৮ ভাগ এলাকা। পাশাপাশি পাঁচ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা ও ঢাকা শহর সংলগ্ন তিন নদীর পানি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের ৩০০ গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর রহদহ বাঁধের প্রায় ৩০০ মিটার অংশ প্রবল পানির তোড়ে ভেঙে পড়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের চারটিসহ মোট পাঁচ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া প্রধান তিনটি নদ-নদী ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা ছাড়াও ঢাকার আশপাশের বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ ও টঙ্গী খালের পানি বাড়বে।
শুক্রবার পর্যন্ত গঙ্গা ছাড়া প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা এবং ঢাকা শহর সংলগ্ন নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তুরাগ নদ মিরপুরে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
এছাড়া নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আরো পাঁচ জেলায়। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে— শরীয়তপুর, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর। গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২০টি স্টেশনে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ৮৩টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে অপরিবর্তিত আছে দুটি স্টেশনে। তাছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৯ ও হ্রাস পেয়েছে ৪১ পয়েন্টে।
পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী ও ডিউটি অফিসার রিপন কর্মকার বলেন, এখন পর্যন্ত ১৮ শতাংশ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কেননা এরই মধ্যে কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে, যা সামনের দিনে আরো কমবে। তবে যেসব এলাকা দিয়ে পানি ভাটিতে নেমে যাচ্ছে, সেসব এলাকা স্বল্প সময়ের জন্য প্লাবিত হতে পারে।
জানা গেছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় গঙ্গা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গত কয়েক দিনের বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে খাবার পানি ও তীব্র খাদ্য সংকটে। এছাড়া গবাদিপশু ছাড়াও ক্ষতির কবলে ক্ষেতের ফসল ও সবজি। এরই মধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে রোপা আমন ও বোনা আউশের ক্ষেত। শীতকালীন সবজির আবাদ রয়েছে ঝুঁকিতে। বন্যা আরো দীর্ঘস্থায়ী হলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়বেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button