বাহরাইনের আল-ফাতেহ জামে মসজিদ

Al fateh Mosqueজাকারিয়া পলাশ: ফাইবার গ্লাসের গম্বুজ আর ঝিলিমিলি আলোর ঝলকানিতে অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত বাহরাইনের আল-ফাতেহ জামে মসজিদ। এটিই বাহরাইনের বৃহত্তম জামে মসজিদ। ৬৫০০ বর্গমিটার আয়তনের সর্বত্রই নয়নাভিরাম নানা কারুকাজে ভরপুর এ মসজিদটি ১৯৮৭ সালে নির্মিত হয়েছে শেখ ইসা ইবন সালমান আল খালিফার সময়ে। বাহরাইন বিজয়ী আহমেদ আল ফাতেহর স্মৃতিতেই এর নামকরণ হয়। ইতালিয়ান মার্বেল পাথরের মেঝে আর দেয়ালে খচিত প্রাচীন নির্মাণশৈলীর ‘কুফিক’ ক্যালিগ্রাফিতে নয়নাভিরাম হয়েছে এর ভেতরের পরিবেশ। এসব ক্যালিগ্রাফিতে সাজানো হয়েছে কোরআন ও হাদিসের বাণী দিয়ে। অনাবিল শান্তিময় পরিবেশে এ মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পালন করতে পারেন সাত হাজার মুসল্লি। বাহরাইনের সবচেয়ে বড় এ মসজিদের দরজায় স্থান পেয়েছে ভারতীয় সেগুন কাঠের কারুকাজ খচিত দরজা। ফাইবার গ্লাস দিয়ে নির্মিত গম্বুজগুলো মসজিদটিকে দিয়েছে স্বাতন্ত্র্য। এতে প্রায় ৬০ হাজার কেজি (৬০ টন) ফাইবার গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাইবার গ্লাসের গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ। বাহরাইনের রাজধানী মানামায় অবস্থিত এ মসজিদটিই দেশটির অন্যতম ইসলামী জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র। ২০০৬ সালে মসজিদের গ্রন্থাগারকে বাহরাইনের জাতীয় গ্রন্থাগারে রূপ দেয়া হয়। ফলে মসজিদটিকে আল-ফাতেহ ইসালমিক কেন্দ্র হিসেবেও অভিহিত করা হয়। এই গ্রন্থাগারের গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। প্রায় একশ’ বছরের পুরনো অনেক মূল্যবান বইপত্র পত্রপত্রিকা আছে। আল কোরআনের ঝকঝকে মুদ্রিত অনুলিপি, পুরনো হাদিস সংকলন, আরবি বিশ্বকোষ, ইসলামিক আইন সংক্রান্ত বিশ্বকোষ, শত বছর আগে মুদ্রিত আল আজহার নামক পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা রয়েছে এখানে। জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে বহু দেশের জ্ঞানপিপাসু ছুটে আসেন এখানে। পাশাপাশি এ মসজিদে সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বহু পর্যটকও ভিড় করেন এখানে। সে বিচারে মসজিদটি এখন বাইরাইনের পর্যটন শিল্পের অন্যতম আকর্ষণীয় উপকরণ হিসেবেও বিবেচিত। প্রতি শুক্রবার এবং জাতীয় ছুটির দিনে পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে মসজিদটি। অন্যদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button