পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল
আদালতে উপস্থাপনযোগ্য যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত না পাওয়ায় পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলা থেকে সাত আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (এফআরটি) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার মেরিট না থাকা, তদন্তে পর্যাপ্ত তথ্য, সাক্ষী না পাওয়ায় এ মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নথিভুক্ত করেছে কমিশন। তবে কানাডা থেকে রমেশের ডায়েরি অথবা কানাডা থেকে মামলা প্রমাণের মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে। সেটা সম্ভব না হলে নতুন করে মামলা দায়ের করা হবে বলে বুধবার দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থানায় (মামলা নং ১৯) মোট সাতজনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় সেতু বিভাগের প্রাক্তন সচিব মোশাররফ হোসেইন ভূঁইয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইপিসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা, কানাডীয় প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও প্রাক্তন পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। এছাড়া মামলার এজাহারে সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও প্রাক্তন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। মামলার আসামি না হলেও তাদের সঙ্গে আসামিদের কি ধরনের যোগাযোগ ছিল তা উল্লেখ ছিল।
দুদক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহর ডায়েরি ঘিরেই পদ্মা সেতু বিষয়ে দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ উত্থাপিত হয়। যেখানে ঘুষ দেওয়ার পার্সেন্টেস লেখা ছিল। রমেশের ডায়েরির অনুলিপি ও বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করতে না পারলে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব নয়। আর কানাডার বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হলে তা পাওয়া সম্ভব নয়। কানাডার আইনি জটিলতার কারণেই দুদকের প্রতিনিধি দুই বার ওই দেশে গিয়েও কোনো আলামত সংগ্রহ কিংবা তথ্য উপাত্ত আনতে পারেনি। এমনকি বিদেশি দুই আসামিদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও পাননি দুদক প্রতিনিধিরা। একারনে গত দেড় বছরের বেশি সময়ের তদন্তে মামলাটিকে এগিয়ে নিতে পারেনি দুদক। অবশেষে গত রবিবার পদ্মাসেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মীর্জা জাহিদুল আলম দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে বিগত মহাজোট সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্তদের বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। যদি কানাডা থেকে রমেশ শাহের কথিত ডায়েরি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়, তাহলে নতুন করে অনুসন্ধান করা যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।