এক নজরে সংবিধানের ১৫টি সংশোধনী

রোববার সংসদে উঠেছে সংবিধানের ১৬তম সংশোধনী। এর আগে আরো ১৫টি সংশোধনী হয়েছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো।
প্রথম সংশোধনী : ১৫ জুলাই ১৯৭৩ সংসদে ‘সংবিধান (প্রথম সংশোধনী) বিল ১৯৭৩’ পাস হয়। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিধান করা হয়।
দ্বিতীয় সংশোধনী : দ্বিতীয় সংশোধনী আনা হয়, ১৯৭৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। অভ্যন্তরীণ বা বহিরাক্রমণে গোলযোগে দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন বিপন্ন হলে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার বিধান করা হয় ওই সংশোধনীর মাধ্যমে।
তৃতীয় সংশোধনী : ১৯৭৪ সালের ২১ নবেম্বর সংবিধানে তৃতীয় সংশোধনী আনা হয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী বেরুবাড়িকে ভারতের নিকট হস্তান্তরের বিধান করে সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়।  সংশোধনী বিলটি পাস হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ নবেম্বর।
চতুর্থ সংশোধনী : সংসদীয় শাসন পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন পদ্ধতি চালু এবং বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনীতি প্রবর্তননের বিধান করে সংবিধানের চর্তর্থ সংশোধনী বিল পাস হয় ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। বিলটি একইদিন উত্থাপন হয়, পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতিও একই দিনে তা অনুমোদন করেন।
পঞ্চম সংশোধনী : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে ১৯৭৯ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের যাবতীয় কর্মকা-কে বৈধতা দানের বিধান করে ১৯৭৯ সালের  ৬ এপ্রিল পাস হয় সংবিধানের ৫ম সংশোধনী বিল।
ষষ্ঠ সংশোধনী : উপ-রাষ্ট্রপতি পদ থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিতকরণ করে ১৯৮১ সালের ৮ জুলাই পাস হয় ৬ষ্ঠ সংশোধনী বিল।
সপ্তম সংশোধনী : ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ৯ নবেম্বর পর্যন্ত সামরিক আইন বলবৎ থাকাকালীন প্রণীত সব ফরমান, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের আদেশ, নির্দেশ ও অধ্যাদেশসহ অন্যান্য আইন অনুমোদনের বিধান করে  ১০ নবেম্বর  ১৯৮৬ সালে পাস হয় সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী বিল।
অষ্টম সংশোধনী : রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতিদান ও ঢাকার বাইরে ৬টি জেলায় হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের বিধান করে  ১৯৮৮ সালের ৭ জুন পাস হয় সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী বিল।
নবম সংশোধনী : ১৯৮৯ সালে সংবিধানের নবম সংশোধনী পাস হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সাথে একই সময়ে উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তিকে পর পর দুই মেয়াদ সীমাবদ্ধ রাখার বিধান করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই বছরের ১০ জুলাই বিলটি পাস হয়।
দশম সংশোধনী : রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যাপারে সংবিধানের ১২৩(২) অনুচ্ছেদের বাংলা ভাষ্য সংশোধন ও সংসদে মহিলাদের ৩০টি আসন আরো ১০ বছরকালের জন্য সংরক্ষণের বিধান করে ১৯৯০ সালের ১২ জুন পাস হয় সংবিধানের দশম সংশোধনী বিল।
একাদশ সংশোধনী : এর বিষয়বস্তু ছিল-অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের স্বপদে ফিরে যাবার বিধান করে ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট পাস হয় সংবিধানের একাদশ সংশোধনী বিল।
দ্বাদশ সংশোধনী : সংসদীয় পদ্ধতির সরকার পুনঃপ্রবর্তন ও উপ-রাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্তি করে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী বিল পাস হয় ১৯৯১।
ত্রয়োদশ সংশোধনী : ১৯৯৬ সালের  ২৭  মার্চ  অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ-নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিধান করে ক্রয়োদশ সংশোধনী বিল পাস হয়।
চতুর্দশ সংশোধনী : ‘সংবিধান (চতুর্দশ সংশোধনী) বিল ২০০৪’ পাস হয় ২০০৪ সালের ১৬ মে। নারীদের জন্য ৪৫টি আসন সংরক্ষণ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংরক্ষণ, অর্থ বিল, সংসদ সদস্যদের শপথ, সাংবিধানিক বিভিন্ন পদের বয়স বৃদ্ধির বিধান করা হয় ওই সংশোধনীর মাধ্যমে।
পঞ্চদশ সংশোধনী : সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয় ২০০১ সালের ২৫ জুন। এর শিরোনাম ছিল-সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধনী) বিল-২০১১। ৩০ জুন পাস হয়। সংবিধানের মূলনীতিতে পরিবর্তন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলুপ্তিসহ সংবিধানে অনেকগুলো মৌলিক পরিবর্তন আনা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button