সৌদি-ইরান সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে !
ইসলামিক স্টেট বা আইএসের হুমকি আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি সৌদি আরব ও ইরানকে ঘনিষ্ঠ করছে। বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘বিদ্যমান ও কৌশলগত হুমকি মোকাবেলার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার। তাদের মতে, আইএসের সৃষ্ট বিরাট হুমকি মোকাবেলায় ইরান ও সৌদি পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক মাস ধরে জঙ্গি গ্রুপটি সারা বিশ্বে ব্যাপক উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। ইরাক ও সিরিয়ায় বিশাল এলাকা দখল, সেখানকার বন্দীদের হত্যা এবং দুই মার্কিন সাংবাদিকের শিরñেদের ঘটনায় এ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
বিশ্লেষকেরা আরো বলেন, এ অঞ্চলের বিশেষ করে সিরিয়া এবং ইরাকে গোষ্ঠীগত উত্তেজনা প্রশমনে রিয়াদ ও তেহরানের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে।
দ্য ডেইলি স্টার লেবানন।
আইএসের হুমকি ইরান ও সৌদি আরবকে অনেক কাছাকাছি নিয়ে এসেছে এবং তাদের মধ্যকার অন্যান্য সমস্যা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার বলে তারা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিলাল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, আইএসের হুমকিতে দীর্ঘ দিনের সমস্যাগুলো সমাধানে সৌদি আরব ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি আইএসকে যুদ্ধে পরাজিত করতে সৌদি আরব ও ইরানের পারস্পরিক সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আইএসকে সফলভাবে নির্মূল করতে ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়ার মতো আঞ্চলিক সমস্যাগুলো নিরসনে তাদের একমত হওয়া দরকার।
সেন্ট জোসেফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সামি নাদেরও একই রকম মতামত পোষণ করেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে হুমকি মোকাবেলায় সৌদি-ইরান সুসম্পর্ক খুবই জরুরি। এ অঞ্চলে অব্যাহত হুমকি মোকাবেলায় উভয় দেশ সহযোগিতার ব্যাপারে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আইএস উভয় দেশের জন্য হুমকি হওয়ায় দুই দেশের প্রতিনিধিরা তাদের মধ্যকার মতবিরোধ কমিয়ে এনেছে।
গত মাসে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান জেদ্দায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সউদ আল ফয়সালের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এর ভেতর দিয়ে এ দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মোড় নেয়। ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আলোচনাকে ইতিবাচক ও গঠনমূলক বলে উল্লেখ করেন। অন্য দিকে সউদ আল ফয়সল বলেন, উভয় দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় সূচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইরান অবদান রাখতে পারে।