স্কটল্যান্ডের এশিয়ান ফুড অ্যাওয়ার্ড পেলেন ড. ওয়ালী
স্কটল্যান্ডের এশিয়ান ফুড অ্যাওয়ার্ড-২০১৪ অর্জন করেছেন ড. ওয়ালী তসরউদ্দিন এমবিই। রেস্টুরেন্ট খাতে ব্যাপক ভূমিকার পাশাপাশি মানব ও সমাজসেবায় দীর্ঘদিন অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে আজীবন এ সম্মাননা দেয়া হয়।
ড. তসরউদ্দিন ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনার উদ্দেশে যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন।
লন্ডনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে ১৯৭৬ সালে তিনি ব্যবসা শুরু করেন স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরায়। স্বাস্থ্যবান্ধব রেন্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী খাবার-দাবারের ব্যাপক প্রচারণা চালান। তার মার্কেটিং পলিসির কারণে যুক্তরাজ্যে এশিয়ান খাদ্যাভ্যাস; বিশেষ করে বাংলাদেশী খাবার-দাবার ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৮২ সালে তসরউদ্দিনের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে বিখ্যাত ‘বারান্দা’ রেস্টুরেন্ট চালুর মাধ্যমে ব্যবসায় হাতেখড়ি হয়েছিল বিখ্যাত শেফ টমি মিয়ার। রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাবেক ইয়ট ‘ব্রিটানিয়া’ যেখানে নোঙর করা তার কাছেই প্রতিষ্ঠিত ব্যতিক্রমধর্মী ব্রিটানিয়া স্পাইস রেস্টুরেন্টটি ব্যাপক সুনামসহ স্কটল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ রেস্টুরেন্ট হিসেবে ‘বিবা’ ও বৃটিশ কারি এ্যাওয়ার্ডসহ অনেক আর্ন্তজাতিক পুরস্কার অর্জন করে।
ব্রিটানিয়া স্পাইস ছাড়াও তার বারান্দা, ল্যান্সার্স, সুরুচি, মহারাজা, কিংস বালতি ও মতিঝিল নামে একাধিক রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। রেস্টুরেন্টখাতে দীর্ঘ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো কোন বৃটিশ-বাংলাদেশী হিসাবে ‘লাইফ টাইম এশিয়ান জুয়েল এ্যাওয়ার্ড’, ‘বিবা’ ইন্ডাস্ট্রি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, ২০১২ সালে স্কটল্যান্ডের কারি কিং খেতাবসহ তিনবার বৃটিশ কারি এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন তিনি।
বাংলাদেশে ও ইউরোপে একজন সফল ব্যবসায়ী এবং কমিউনিটি লিডার হিসেবে সুপরিচিত ড. ওয়ালী তসরউদ্দিন। ১৯৮৪ সালে স্কটল্যান্ডে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ‘জাস্টিস অব পিস’ মনোনীত, ১৯৯৩ সাল থেকে স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের অনারারি কনসাল জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ভূমিকার জন্য ১৯৯৫ সালে বৃটেনের রাণী কর্তৃক এমবিই খেতাবসহ ডক্টরেট, কারি কিংসহ বহু খেতাব ও অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স, বাংলা-স্কট ফাউন্ডেশন ও এডিনবরার কমনওয়েলথ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. তসরউদ্দিন দীর্ঘদিন তিনি বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি ইউনিভার্সাল কোবা করপোরেশন লিমিটেড, অর্নেট আর্কেট গ্রুপ, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতাল ও ব্রিটানিয়া স্পাইস রেস্টুরেন্টের সিইও। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত তসরউদ্দিনের জীবনগ্রন্থ ‘ওয়ালী উদ্দিন: ব্লেসেড সন অব টু নেশনস’-এর মুখবন্ধ লিখেছেন স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স স্যালমন্ড।
উল্লেখ্য, ড. ওয়ালী তসরউদ্দিন ১৯৫২ সালের ১৭ই এপ্রিল মৌলভীবাজার জেলার কামালপুর ইউনিয়নের নালিহুরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি এডিনবরার শহরের ওশেন ড্রাইভ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।