ব্রিটেনের ডিটেনশন সেন্টারে বাংলাদেশির মৃত্যু
তবারুকুল ইসলাম: ব্রিটেনের ডিটেনশন সেন্টারে রুবেল আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমত তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে। সহবন্দিদের অভিযোগ- প্রচণ্ড বুকের ব্যাথায় রুবেল আহমেদ নামের এ যুবক কয়েক ঘণ্টা ধরে চিৎকার করলেও কর্তৃপক্ষ তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এ ঘটনায় ডিটেশন সেন্টারের অন্যান্য বন্দি বিক্ষোভ শুরু করলে দাঙ্গা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুক্রবার রাতে লিঙ্কনশায়ারের সুইনডার্বিস্থ মর্টন হল ডিটেনশন সেন্টারে রুবেল আহমেদের মৃত্যু ঘটনা ঘটে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দাবি, রুবেল আহমদ ‘আত্মহত্যা’ করেছে। কিন্তু কীভাবে আত্মহত্যা করেছে তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। এ মৃত্যুর ঘটনা পরিবারকে জানাতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গ করে ব্রিটেনে বসবাস করছে এমন ইমিগ্রেন্টদের আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়। বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে রুবেল আহমেদকে তিনদিন আগে আটক করে এ ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়। গত মার্চ মাসে বেডফোর্ডশায়ারের আর্লস উড সেন্টারে খ্রিস্টিন কেইস নামে একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ডিটেনশন সেন্টারকে ‘নাৎসিদের মৃত্যু কুপে’র সাথে তুলনা করে সেন্টারগুলো বন্দের দাবি উঠেছে।
একই ডিটেনশন সেন্টারে আটক রুবেল আহমেদের বন্ধু আক্তার সোহেল (২৬) জানান, রাতের বেলা রুমের দরজা তালা দেয়া থাকে। রুবেল বিকাল থেকে বুকে ব্যথা অনুভব করছিল। সাহায্যের জন্য তিনি এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে দরজার ঠোকাঠুকি করে।
ইস্ট মিডল্যান্ড এম্বুলেন্স সার্ভিস এনএইচএস ট্রাস্ট জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে এগারটার পর মর্টন হল থেকে ফোন পেয়ে এম্বুলেন্স টিম সেন্টারে যায়। কিন্তু ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
রুবেল আহমেদের ব্রিটেন প্রবাসী আত্মীয় আজমল আলী বলেন, অন্য এক বন্দি রুবেলের সলিসিটরকে ফোন করার কারণে বিষয়টি তারা জানতে পারেন। পরদিন হোম অফিস থেকে জানানো হয়, রুবেল আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের আচরণ ছিল অসহযোগিতাপূর্ণ’।
আজমল আলী জানান, রুবেলের পরিবারের সকলেই থাকে বাংলাদেশে। রুবেল আত্মহত্যা করেছে এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
আহমদ সলিসিটরের সারওয়ার খান হোম অফিসের সমালোচনা করে বলেছেন, রুবেল আহমদের ‘নেক্সট টু কিন’ (জরুরী মুহূর্তে যোগাযোগের ব্যক্তি) কে তার বিস্তারিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ফাইলে রয়েছে। ফলে বিলম্বের বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে অবশ্যই কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।
ইমিগ্রেশন মিনিস্টার জেমস ব্রোকেনশায়ার বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।