স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা ঠেকাতে মরিয়া ব্রিটিশ নেতারা
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আর মাত্র ৬দিন বাকি। স্কটল্যান্ড যাতে শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনের সঙ্গেই থাকে তার জন্যে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের শীর্ষ রাজনীতিকরা। ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাতে সেখানে ছুটে গেছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। প্রধানতম অন্য দুটো দলের নেতারাও ভোটারদেরকে ব্রিটেনের ঐক্যবদ্ধ থাকার ব্যাপারে বোঝাতে স্কটল্যান্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে এই প্রচারণায় আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ করছেন স্বাধীনতার পক্ষের নেতারা। সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে যে গণভোটের ফলাফল যেকোনো দিকেই যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্কটল্যান্ডকে যুক্তরাজ্যের অংশ হিসাবে ধরে রাখতে স্কটল্যান্ডের মানুষদের উদ্দেশে আবেগপূর্ণ এক আবেদনে বলেছেন, ১৮ সেপ্টেম্বরের গণভোট টোরি দলের প্রতি বিতৃষ্ণা প্রকাশের কোনো ভোট নয়। এটা যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যত অখণ্ডতার ওপর ভোট। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার বিপক্ষে ভোট দেয়ার জন্য তিনি স্কটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন তার কাছে দেশ দলের ঊর্ধ্বে।
স্কটল্যান্ডকে যুক্তরাজ্যের মধ্যে ধরে রাখতে মরিয়া বৃটেনের প্রধান অন্য দুটি রাজনৈতিক দলের নেতা- লেবার নেতা এড মিলিব্যান্ড এবং লিবারেল ডেমোক্রাট নেতা নিক ক্লেগও একইসঙ্গে স্কটল্যান্ডে গেছেন শেষ মূহুর্তের প্রচারণা চালাতে।
জনমত জরিপে গণভোটের সম্ভাব্য ফলাফল যে কোনো দিকে যেতে পারে এমন ইঙ্গিত পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো ‘না’ ভোটের পক্ষে মত টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
স্কটল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী স্কটিশ ন্যাশানাল পার্টির অ্যালেক্স স্যামন্ড বলছেন, ‘না’ ভোটের পক্ষে সমর্থন ক্রমেই কমছে।
তিনি বলেন, ‘পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা সফল হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো কয়েকমাস আগে যা বলেছিল, তা-ই এখন আবার নতুন করে সাজিয়ে গুছিয়ে ওরা বলতে এসেছে।’
অ্যালেক্স স্যামন্ড বলেন, ‘স্কটল্যান্ডের মানুষ তাদের মনস্থির করে ফেলেছে। এখন আর তাদের নতুন করে বোঝানোর রাস্তা নেই। মূল কথা হলো- স্কটল্যান্ড চায় উন্নত অর্থনীতি, উন্নত সমাজব্যবস্থা।’
ক্যামেরন স্কটিশ ভোটারদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এই গণভোট সাধারণ নির্বাচন নয় যে, সিদ্ধান্ত সঠিক মনে না হলে পাঁচ বছর পর তা আবার নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে বদলে ফেলা সম্ভব।’
তিনি বলেন, গণভোটের সিদ্ধান্ত পাল্টানো সম্ভব নয়- একবার সিদ্ধান্ত নিলে তা পরবর্তী শতক পর্যন্ত চিরস্থায়ী হবে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী নেতার স্কটল্যান্ডে প্রচারণা চালাতে ছুটে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে স্কটল্যান্ডকে যুক্তরাজ্যের মধ্যে ধরে রাখতে বৃটিশ নেতারা এখন কতটা মরিয়া।