স্কটল্যান্ডের স্বাধীন হওয়ার সম্ভাবনায় আতংকে ইউরোপ!
স্কটল্যান্ডের স্বাধীন হওয়ার সম্ভাবনায় ইউরোপে তীব্র আতংক সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও একইভাবে স্বাধীনতার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে এ আতংক দেখা দিয়েছে।
স্কটল্যান্ডের গণভোটের ফলাফলের দিকে গভীর আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে স্পেনের স্বশাসিত অঞ্চল ক্যাটালোনিয়ার অধিবাসী থেকে শুরু করে বেলজিয়ামের ডাচভাষী ফ্ল্যার্ন্ডাস জনগোষ্ঠী পর্যন্ত সব জায়গার জাতীয়তাবাদীরা। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ দেশ ব্রিটেনের ভেঙে যাওয়ার আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ব্রাসেলস।
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঢেউ শেষ পর্যন্ত ইউরোপের পূর্ব সীমান্তকেও তীব্রভাবে আন্দোলিত করতে পারে। বাল্টিক সাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর জাতিগত সংখ্যালঘু রুশরা অধিকতর স্বশাসনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এক্ষেত্রে মস্কোর সহযোগিতা পাবে তারা।
গণভোটের মধ্য দিয়ে স্বাধীন স্কটল্যান্ডের জন্ম হলেও তার ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকা সহজ হবে না। বরং প্রথম দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হয়ত নতুন এ রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে অতিষ্ট করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য শেষ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করে নেয়া ছাড়া কোনো পথ থাকবে না বলেও মনে করছেন তারা।
লন্ডনের কিং কলেজের স্প্যানিশ ও ইউরোপীয় স্টাডিজের ফেলো পাবলো কালডেরন মার্টিনেজ বলেন, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য গভীর গোলমেলে পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোনো সদস্য দেশ ভেঙে যদি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয় তবে নবগঠিত দেশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার জন্য এ রকম রাষ্ট্রকে নতুন করে আবেদন করতে হবে। এ বিষয়টি সেই ২০১২ সালেই নিশ্চিত করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জোসে ম্যানুয়েল ব্যারেসো। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, স্কটল্যান্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবে না। তার এ বক্তব্য তখন জাতীয়তাবাদী মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হারমেন ভ্যান রোমপুই ডিসেম্বরে ক্যাটালোনিয়া প্রসঙ্গে বলছিলেন, স্পেন ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে মনে করছেন। এ ছাড়া, ক্যাটালোনিয়ায় স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট দেয়ার প্রচণ্ড বিরোধিতা করছে স্পেন। গণভোটের দাবিতে বৃহস্পতিবার বার্সেলোনায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছে। স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যবর্তী বাস্ক অঞ্চলের পরিস্থিতিও বেশ স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে।