মাওলানা সাঈদীর মামলায় চূড়ান্ত রায় বুধবার
বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মোফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল মামলার চূড়ান্ত রায় আগামীকাল বুধবার ঘোষণা করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগামীকালের মামলার কার্যতালিকায় মাওলানা সাঈদীর আপিল মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টি এক নম্বর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এক দিন আগেই প্রকাশ করা হয় পরবর্তী দিনের মামলার কার্যতালিকা।
গত ১৬ এপ্রিল আপিল বিভাগে মাওলানা সাঈদীর আপিল মামলার সমস্ত কার্যক্রম শেষে রায় অপেক্ষমাণ ঘোষণা করা হয়। প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আপিল মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটাপাট, নির্যাতন, ধর্ষণ, ধর্মান্তরকরণসহ ২০টি অভিযোগ আনে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে আটটি অভিযোগে মাওলানা সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
মাওলানা সাঈদীর খালাস চেয়ে ওই বছর ২৮ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে আসামি পক্ষ। যে ছয়টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে কিন্তু সাজা উল্লেখ করেনি ট্রাইব্যুনাল সেগুলোতে সাজা উল্লেখ করার দাবি জানিয়ে একই দিন রাষ্ট্রপক্ষও আপিল আবেদন করে।
ওই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর আপিল শুনানি শুরু হয়। সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় পর আলোচিত এ মামলায় আপিল শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ ঘোষণা করা হয় গত ১৬ এপ্রিল।
মাওলানা সাঈদীর আপিল মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি মো: মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল। আপিল বেঞ্চের অপর চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক এবং বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
মাওলানা সাঈদীকে দুটি হত্যার অভিযোগে মুত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল-১। এ দুটি অভিযোগ হলো ইব্রাহীম কুট্টি এবং বিশাবালী হত্যা। মাওলানা সাঈদীর উপস্থিতিতে, নির্দেশে এবং সহযোগিতায় তাদের হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। এ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় রায়ে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে মোট ২০টি অভিযোগে চার্জ গঠন হয়। এর মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল। প্রমাণিত আটটি অভিযোগের দুটি হত্যার অভিযোগ। দুটি হত্যার অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আদেশ দেয়ার কারণে বাকি ছয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তাতে কোনো শাস্তির কথা উল্লেখ করেননি ট্রাইব্যুনাল। বাকি যে ছয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্মান্তরকরণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ প্রভৃতি।
১২টি অভিযোগ থেকে মাওলানা সাঈদীকে খালাস দেয়া হয় রায়ে। খালাস দেয়া অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের পিতা ফয়জুর রহমানসহ পিরোজপুরের তিনজন সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ, ভাগিরথী হত্যা এবং ভানুসাহাকে ধর্ষণের অভিযোগ।