ব্রিটেনে স্বপ্নভঙ্গ
বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা যুক্তরাজ্যে মানসম্মত শিক্ষার আশায় গমন করে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কেবল নিদারুণ বাস্তবতারই সম্মুখীন হয় তারা। ‘স্বপ্নভঙ্গ’ নামের এমনই একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আল জাজিরায়। সেখানে বলা হয়েছে, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ব্রিটেনে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৪ গুণ। এদের অনেকেই বেশ ভাল পরিবারের সন্তান। তাদের পিতামাতা অর্থ খরচ করে নিজেদের সন্তানদের যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছিলেন, যাতে তারা একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃটিশ ডিগ্রি লাভ করতে পারে। বিশ্বমানের শিক্ষা লাভের আশায় অনেকে স্বল্প প্রস্তুতিতে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর প্রতারণার শিকার হন।
জগনাবুশ গ্রাম থেকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়া জাবারুল নামের এক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বলেন, আমি সিলেটের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ডিগ্রি লাভ করি। সবাই আমার কাছ থেকে আরও ভাল কিছু প্রত্যাশা করছিল। আমি মনে করি, সবাই আমার স্বপ্নের ভাগিদার। আমি এখানে এসেছি স্বপ্ন পূরণ করতে। কিন্তু আমি যখন পৌঁছলাম, তখন যা দেখলাম, তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। প্রচুর শিক্ষার্থী এখানে আসছে। যদি ১০০ জন শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন করে, এদের সবাই পেয়ে যায়। সবকিছুই ছিল অগোছালো। অনেক শিক্ষার্থীই দেখতে পায়, তারা যেখানে উন্নত ডিগ্রি লাভের জন্য পড়তে এসেছে, সেটা মূলত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যামপাস থাকা তো দূরে থাক, কোন ভারতীয় রেস্তোরাঁর উপরের তলায় কয়েকটি কক্ষ ব্যতীত আর কিছুই নেই। অনেক ছাত্রই প্রতারণার খপ্পরে পড়ে। বেশির ভাগই নিজেদের দেশের স্থানীয় এজেন্টদের অসদাচরণের শিকার হয়। এছাড়া বৃটেনের বিলুপ্ত বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েই ঠাঁই হয় সেসব ছাত্রছাত্রীর। তবে এখন বৃটিশ সরকার তাদের নীতিমালার পরিবর্তন এনেছে। এখন ভিসা পেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ‘হাইলি ট্রাস্টেড সপন্সরস’-এর তালিকায় নাম থাকতে হবে। এই তালিকা বৃটিশ সরকারের মানসম্মত ও বৈধ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা। তাই কেউ যদি বৃটেনে পড়াশুনার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনাকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, সেটির নাম বৃটিশ সরকার প্রদত্ত এই তালিকায় আছে কি না। অনুমোদিত ও বৈধ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাটি পেতে পারেন- www.gov.uk , approved list of highly trusted sponsors.