ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে রুশনারা আলীর পিটিশন
ব্রিটেনে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে বৃটিশ এমপি রুশনারা আলী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কাছে ২৫ হাজারেরও বেশি লোকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি পিটিশন জমা দিয়েছেন। ব্রিটিশ ব্যাংক বার্কলেস সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য তাদের ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রবাসীরা নিজেদের দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে থাকেন। পিটিশন জমা দেয়ার সময় ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে বেশ কিছু সোমালিয় ও বাংলাদেশী বিক্ষোভ করেছেন। এতে আরও বলা হয়, প্রায় ১০ বছর ধরে বৃটেনে আছেন বাংলাদেশী ইমরান আহমেদ। দেশের বাড়িতে টাকা পাঠাতে হোয়াইট চ্যাপেলের একটি মানি এক্সচেঞ্জে যান তিনি। ঈদ আর যাকাতের জন্যেই এই অর্থ পাঠান। দেশে তার টাকার ওপর নির্ভরশীল তার পিতামাতা। তার মতো আরও অনেকেই এই মানি এক্সচেঞ্জ থেকে দেশে অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু এখন তারা একটি বড় রকমের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কারণ, এরকম আড়াইশর মতো এজেন্সি বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃটিশ ব্যাংক বার্কলেস এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর ব্যাংকিং সেবা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, মানি লন্ডারিং ঠেকাতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থা খুব একটা শক্তিশালী নয়। সম্প্রতি এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এ ব্যাংকটিকে বড় ধরনের অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে এমপি রুশনারা আলী ২৫ হাজারেরও বেশি লোকের স্বাক্ষর সংগ্রহের পর বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গতকাল একটি পিটিশন জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, বার্কলেসের এই সিদ্ধান্তের কারণে আমার নির্বাচনী এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশী, ভারতীয় ও সোমালিয়রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণেই আমি এই পিটিশন জমা দিয়েছি। টাকা পাঠানোর জন্য আমাদের বৈধ ও নিয়ন্ত্রিত মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন। যাতে আমরা নিজেদের দেশে আত্মীয়-স্বজন, প্রিয়জনের কাছে অর্থ পাঠাতে পারি। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে অর্থ প্রেরণের এই ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কোটি কোটি মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। পিটিশন জমা দেয়ার সময় ডাউনিং স্ট্রিটে গিয়েছিলেন আরও একজন এমপি স্টিভেন টিম। বার্কলেস ব্যাংকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারের করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, বার্কলেস ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে আমেরিকা সরকার। কিন্তু আমরা চাই এই ব্যাংকই বৃটেনে বৈধ ব্যবসার যে সেবা দিয়ে আসছে সেটা চালু রাখতে বৃটিশ সরকার যাতে হস্তক্ষেপ করে। আমেরিকার শাস্তিমুলক ব্যবস্থার কারণে বৃটেনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে শাস্তি পেতে না হয়। আমরা আশা করছি বৃটিশ সরকার সেটা করবে। রুশনারা আলীর উদ্যোগে এর আগে ৫০ জনের মতো বৃটিশ এমপি বার্কলেস ব্যাংকের কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলেন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্যে। এর কোন জবাব পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে রুশনারা আলী বলেন, বার্কলেস ব্যাংক মানি এক্সচেঞ্জ সংস্থাগুলোকে ব্যাংকিং সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল কিছু কিছু এজেন্সির জন্য তারা সেটা বাড়িয়েছে। কিন্তু এখনও কিছু কিছু এজেন্সি আছে যেগুলো আগামী ১২ তারিখের পর বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা আশা করছি বার্কলেস তাদের এ সিদ্ধান্তের কথা বিবেচনা করবে।