যুক্তরাষ্ট্রে খুনের দায়ে বাংলাদেশীর ৪০ বছর কারাদন্ড
পঁচিশ বছর আগে সাবেক প্রেমিকার ছেলেবন্ধুকে খুনের দায়ে এক বাংলাদেশিকে ৪০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ডেইলি মেইল ও হাফিংটন পোস্ট জানিয়েছে, দণ্ডিত মাহফুজ হক (৪৭) ১৯৮৯ সালের ৯ অগাস্ট সাবেক প্রেমিকার ছেলেবন্ধুকে হত্যায় অভিযুক্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
তবে ২০১১ সালে নয়া দিল্লিতে একটি টেনিস প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন মাহফুজ।
গত জুলাইয়ে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যে ফেরত পাঠানো হয়, যেখানে তিনি ছুরি মেরে হত্যা করেছিলেন ১৯ বছর বয়সী তরুণ টড কেলিকে।
এর আগে অবশ্য মাহফুজ বাংলাদেশে ফেরার জন্য জোর চেষ্টা চালান।
গত সোমবার স্টুবেন কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক উইলিয়াম ফি টড কেলিকে হত্যায় ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মাহফুজকে সর্বোচ্চ সাজা দেন।
আদালতে মাহফুজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে খুনের ঘটনা স্বীকার করে অনুতাপ প্রকাশ করেন।
ইন্ডিয়ানা রাজ্যের হ্যামিলটনে টড কেলিকে তার বাসায় হত্যার পর ওই বছরের নভেম্বরে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া মাহফুজকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমান।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় ২৫ বছর তার কোনো হদিস করতে পারেনি।
খুন হওয়ার পর কেলির মৃতদেহ প্রথম আবিষ্কার করেন তার মেয়েবন্ধু ক্রিস্টিন মাটজফেল্ড, যার সঙ্গে মাহফুজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
আদালতের নথি থেকে জানা গেছে, কেলির বাসার বাইরে পড়ে থাকা একটি সিগারেটের টুকরোর সূত্র ধরেই পুলিশ বুঝতে পেরেছিল মাহফুজ সেখানে কেলির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
ঘটনার দুই সপ্তাহ পর সে সময়ের ২২ বছরের তরুণ মাহফুজের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়। সাবেক প্রেমিকা ক্রিস্টিনের সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক হলে মাহফুজ তাকেও খুন করার হুমকি দিয়েছিলেন বলে সে সময় অভিযোগ ছিল।
২৫ বছর আগে খুনের ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশনেও বেশ আলোচিত হয়েছিল। ওই ঘটনা নিয়ে ‘আনসলভড মিস্টিরিস’ এবং ‘আমেরিকাস মোস্ট ওয়ান্টেড’ নামের দুটি অনুষ্ঠানেও জায়গা করে নিয়েছিল।