বহু ভাষা বহু বর্ণের হাজীদের মিলনস্থল এখন মক্কা
শহীদুল ইসলাম, মক্কা থেকে : পবিত্র মক্কা নগরীতে এখন হাজীদের ঢল নেমেছে। হাজী আসা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে যারা আগেভাগে সৌদি আরবে এসে আগে মদীনা গিয়েছিলেন, তারাও এখন চলে আসছেন মক্কায়। ফলে মক্কা এখন বিশ্বের প্রায় ২ শতাধিক দেশের নারী-পুরুষ হাজীদের মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। প্রতি ওয়াক্তের নামাযে পবিত্র কাবা শরীফে প্রচ- ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত শুক্রবার ছিল সাম্প্রতিককালের সর্ববৃহৎ জুমার নামাযের জামায়াত যা পবিত্র কাবা শরীফে অনুষ্ঠিত হয়। শৃঙ্খলা বিধানে ইতোমধ্যে কাবা শরিফ ও তার আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
পবিত্র জিলহজ্ব মাসের আজ সৌদি আরবের তারিখ অনুসারে ৩ তারিখ। আগামী শুক্রবার ৯ জিলহজ্ব। ঐদিন সমবেত হবেন আরাফাতের ময়দানে বিশ লক্ষাধিক হাজী। ঐ দিনই হজ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা। আরাফাতের ময়দানে ৯ জিলহজ্ব হাজির হওয়া বাধ্যতামূলক। এটা ছাড়া হজ্বই হবে না। এই হজ্ব কার্য বিশাল এক কর্ম যা সুস্পন্ন করা সহজ কার্য নয়। বিশ্বের বহু প্রান্ত থেকে আসা বহু ভাষা এবং বর্ণের মানুষ এসেছেন হজ্ব করতে। তাদের একজনের ভাষা অন্যরা বুঝেন না। তাদেরকে শৃঙ্খলা মাফিক হজ্বের সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করানো সহজ কাজ নয়। সে জন্য সৌদী সরকার শৃঙ্খলা বিধানে নিয়োজিত পুলিশের পাশাপাশি নিয়োগ করেছেন সেনাবাহিনী। তারা এখন প্রতি ওয়াক্ত নামাযে হাজীদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে আগমন-নির্গমন কার্যক্রম তদারকি করছেন। তবে এই সেনাবাহিনী ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের। সেনাবাহিনীর যে সাধারণ মেজাজ মর্জি তা তাদের মধ্যে দেখা যায় না। কোন হাজীর সাথে কোন সেনা সদস্যের দুর্ব্যবহার করতে কখনোই দেখা যায় না। হাজীরা আল্লাহর মেহমান। এই কথা মাথায় রেখেই সেনা সদস্যরা হাজীদের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলা এবং শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে যাতায়াত ও নামাযে দাঁড়ানোর কথা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ভাষা বুঝতে না পারলে হাজীর কাঁধ থেকে জায়নামায নিয়ে নিজেই তা বিছিয়ে দিয়ে সেখানে বয়োবৃদ্ধ হাজীদের দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই সেনা সদস্যদের গায়ে সেনাবাহিনীর পোশাক থাকলেও তাদের হাতে কোন অস্ত্র নেই। হয়তো ভীতি দূর করতেই এই ব্যবস্থা।