বার্লিনের মেয়র হচ্ছেন এক ফিলিস্তিনি !
বার্লিনের লর্ড মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইট ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তার স্থলাভিষিক্ত হবার সম্ভাবনা ৩৭ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রাইট সালেহর। তিনি পাঁচ বছর বয়সে পশ্চিম তীর থেকে বার্লিনে এসেছিলেন।
বার্লিন বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা সামাজিক গণতন্ত্রীদের নেতৃত্বাধীন একটি জোট সরকারের হাতে, ক্লাউস ভোভেরাইট যার গভর্নিং মেয়র বা শাসক মেয়র।
ভোভেরাইট গত আগস্ট মাসে ঘোষণা করেন, তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন, যার পর তার এসপিডি দলের সদস্যরা পত্র মারফত ভোটের মাধ্যমে ভোভেরাইটের উত্তরসূরি নির্বাচন করার প্রচেষ্টা করছে। এই পোস্টাল ব্যালট শেষ হবে আগামী ১৭ই অক্টোবর।
ব্যালটে সালেহ’র আরো দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকা সত্ত্বেও, যেহেতু তিনি বার্লিন বিধানসভায় এসপিডি গোষ্ঠীর নেতা, সেহেতু তার জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। পত্রভোটে জয়ী হলে বিধানসভায় পর্যাপ্ত ভোট পেতে তার কোনো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।
বার্গার কিং থেকে লর্ড মেয়র
সালেহ’র কাহিনি জার্মানিতে বহিরাগতদের অন্তর্ভুক্তি ও প্রগতির একটি নিদর্শন হিসেবে গণ্য হতে পারে। আশির দশকের সূচনায় ফিলিস্তিনি ‘অতিথি শ্রমিকদের’ সন্তান হয়ে তৎকালীন পশ্চিম বার্লিনে এসেছিলেন।
গোড়ায় ‘বার্গার কিং-এ কাজ করেছেন সালেহ; পরে নিজে একটি মুদ্রণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। বার্লিনে চিরকালই বহু বিদেশি-বহিরাগত-অভিবাসীদের বাস, বিশেষ করে তুর্কিদের।
অভিবাসীদের সম্পর্কে সালেহ’র মন্তব্য, ‘বর্তমানে বহু তরুণ মানুষজনের অনুভূতি যে, তাদের (এই সমাজে) কোনো অংশ নেই।’
কাজেই (লর্ড মেয়র পদে) তার নির্বাচন লক্ষ লক্ষ মানুষকে ‘সাহস এবং আশা’ দেবে এবং দেখাবে যে, কে কোথায় জন্মেছে, তা সত্ত্বেও সব মানুষ এক, সালেহ মনে করেন।
ইতিহাস গড়া
মাত্র ১৮ বছর বয়সে সালেহ সামাজিক গণতন্ত্রী দলে যোগদান করেন। তার ঠিক ১৯ বছর পরে আজ তিনি বার্লিনের শাসক মেয়র হতে চলেছেন। তা যদি সত্যিই ঘটে, তাহলে ‘সেটা হবে একটা সুবিশাল সংকেত এবং আমরা সকলে মিলে বার্লিনে ইতিহাস সৃষ্টি করব’ বলেছেন সালেহ।
বার্লিন রাজধানী হলেও জার্মানির ‘দরিদ্রতম’ শহরগুলের মধ্যে পড়ে। ভোভেরাইট বার্লিনকে বলেছিলেন, ‘দরিদ্র হলেও আকর্ষণীয়।’ বার্লিনকে আজ হাই-টেক স্টার্ট-আপের কেন্দ্র বলে গণ্য করা হয়, কিন্তু এখানে প্রথাগত শিল্প-কারখানা বিশেষ নেই।
সালেহ বলেছেন, ‘বার্লিন বাড়ছে, বার্লিনের খুব ভালো বিকাশ ঘটছে, কিন্তু বহু মানুষের এই প্রবৃদ্ধিতে কোনো ভাগ নেই। অনেকের ক্ষেত্রেই যা কিছু ঘটছে, তার সঙ্গে তাদের যেন কোনো সম্পর্ক নেই। আমি চাই যে, আরো অনেকে যেন সমৃদ্ধির ভাগ পান।’
আর বার্লিনে ইসরায়েল বিরোধী প্রতিবাদে ইহুদি ‘বিদ্বেষ’ সম্পর্কে তার মন্তব্য, ‘রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ আলাদা হলে, সমালোচনা করতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু ইহুদি বিদ্বেষের কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।