স্কটিশ লেবার পার্টির এমপি মনোনয়ন পেলেন ফয়ছল চৌধুরী এমবিই

Foysolদীর্ঘ কাল যাবত বাংগালীরা বসবাসরত করে আসছেন স্কটল্যান্ডে। এখানকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্থানীয় বাংলাদেশীদের  ভুমিকা রেখে আসছেন নানাভাবে। রাজধানী এডিনবরা, ওয়েল ক্যাপিট্যাল আবারডিন, ডান্ডি, মার্চেন্ট সিটি গ্লাসগো সহ স্কটল্যান্ডের গুরুত্বপুর্ন শহরগুলোতে বাংলাদেশীরা সুনামের সাথে কারী ইন্ডাষ্ট্রী পরিচালনা করে আসছেন। স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এখানে পরিচালিত হয়ে আসছে নানা কার্যক্রম। বাংলাদেশী  জাতীয় দিবস, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত রয়েছেন স্কটিশ পার্লামেন্টের মেম্বার থেকে শুরু করে স্থানীয় কাউন্সিলর গন। বাংলাদেশী রাজনীতি নিয়ে সবসময় সরব ছিলেন স্কটিশ বাংলাদেশী জনগন। মুলধারায় রাজনীতিতে বাংলাদেশী কমিউনিটির অংশগ্রহনের মত বিষয়টি দীর্ঘ কাল থেকে  সচেতন মহলে আলোচিত হয়ে আসছিল। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘঠিয়ে অবশেষে কমিউনিটি এখন স্বপ্ন পুরনের দোরগোরায়। স্কটিশ লেবার পার্টির পার্লামেন্টারী প্যানেলে প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন এডিবরার বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও ব্যাবসায়ী ফয়ছল হোসেন চৌধুরী এমবিই। স্কটিশ পার্লামেন্ট  কিংবা ওয়েস্টমিনিষ্টার পার্লামেন্টের আগামী নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে সম্ভ্রাব্য প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যামে  মুলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশী কমিউনিটির অংশগ্রহনের শুভ সুচনা ঘঠল।
এডিনবরা এন্ড লোদিয়ান  রিজিওন্যাল ইকুয়্যালিটি কাউন্সিল (এলরেক) এ  বর্তমান চেয়ার হিসাবে গুরত্বপুর্ন দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি উল্লেখ্য, পর পর তিন বার এলরেক এর চেয়ার হিসাবে নির্বাচিত হওয়া ছিল বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য একটি বিশাল গর্বের ব্যাপার। বাংলাদেশীজ ফর বেটার টোগেদার ক্যাম্পেইন এর সমন্বায়ক ছিলেন তিনি। ঐতিহাসিক গনভোটে  ’নো’ ক্যাম্পেইনে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির অংশগ্রহন ছিল চোখে পড়ার মত।
ফয়ছল চৌধুরী নবিগঞ্জ থানার বদরদি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। পরিবারের সাথে ৭ বছর বয়সে  বিলেত আসেন, প্রথমেই ম্যানঞ্চেষ্টার ও ১৯৮৩ সালে এডিনবরায় স্থানান্তর হন। বাবার অসুস্থতায় বড় ছেলে হিসাবে পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে তরুন বয়সেই পারিবারিক ব্যাবসা: বারান্দা রেষ্টুরেন্ট পরিচালনার সাথে জড়িত হয়ে পড়েন।
মামা ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন এমবিই -র সাহচর্যে ও বাবা আলহাজ্ গোলাম রব্বানী চৌধুরীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থাৎ পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী ব্যাবসার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে যুক্ত হয়ে পড়েন কমিউনিটির নানা উন্নয়নমুলক  কার্যক্রমে।
বাংলাদেশী কমিউনিটির গন্ডি ছাড়িয়ে এডিনবরায় বসবাসরত অন্যান্য এথনিক মাইনরিটি কমিউনিটির উন্নয়নে নানাবিধ কাজের সাথে যুক্ত  হয়ে পড়েন ফয়ছল চৌধুরী। এসবের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০০৪ সালে তরুন বয়সেই ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞী কতৃক ’এমবিই’ খেতাবে  ভুষিত হন। পরবর্তীতে ব্রিটিশ বাংলাদেশী টেলিভিশন কতৃক ’চ্যানেল এস  কমিউনিটি এওয়ার্ড’ পান ২০০৬ সালে।
স্কটল্যান্ডের বৃহত্তম মাল্টিকালচারাল আয়োজন ’এডিনবরা মেলা’-র প্রতিষ্টাকালীন ডাইরেক্টর ফয়ছল চৌধুরী- গিল্ড অব বাংলাদেশী রেষ্টুরেণ্টার ইন স্কটল্যান্ড -র প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ সমিতি এডিনবরার চেয়ারম্যান, কাউন্সিল অব বাংলাদেশীজ ইন স্কটল্যান্ড এর সাধারন সম্পাদক, যুক্তরাজ্য নবিগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট -র যুগ্ম জেনারেল সেক্রেটারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সাইক্লোন আপিল এবং ২০০৮ সাইক্লোন সিডর আপীলে তার ভুমিকা ছিল অগ্রগণ্য। ফয়ছল চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০০৯ সালে প্রথমবারের মত স্কটল্যান্ডে এডিনবরা কাউন্সিল কতৃক আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয় এবং ঐদিন স্কটিশ পার্লামেন্টে এতদসংক্রান্ত একটি পার্লামেন্টারী মোশন ঘোষনা দেয়া হয়। ২০১২ সালে স্কটিশ পার্লামেন্ট সর্বপ্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে এতে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় বাংলাদেশীরা যোগ দেন।
স্থানীয় হার্টস অব মিডলোদিয়ান ফুটবল ক্লাবের তুখোড় সমর্থক ও ম্যান-ইউ ফ্যান- ক্রীড়ামোদী ফয়ছল চৌধুরী ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, øুকার টুর্ণামেন্টে অসংখ্যবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। দুই সন্তানের জনক মি: চৌধুরী এডিনবরায় বাংলাদেশী কমিউনিটির ভাবমুর্তি উজ্জল করতে মুলধারার রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিগত ২০ বছর ধরে কমিউনিটি এবং ইকুয়ালিটি সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি  সাধারন মানুষের মধ্যে আর্থ-সামাজিক অসাম্য রয়েছে তা দুরীকরনে শুধুমাত্র লেবার পার্টি কতৃক প্রনীত পদক্ষেপ সমুহ উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখতে পারে এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে লেবার পার্টির পলিসির কোন বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button