হজ্ব সেলফির কড়া সমালোচনায় আলেমগণ
বিশ্ব এখন সেলফি জ্বরে ভুগছে। এই জ্বর থেকে বাদ যাননি মক্কায় হজ্ব¡ব্রত পালন করতে যাওয়া হাজিগণও। তবে হজ্বে এ প্রবণতার কড়া সমালোচনা করেছেন আলেমগণ।
অনেকে হজ্ব করতে গিয়ে কাবাসহ ইসলামী পবিত্র স্থানগুলোকে পেছনে রেখে তাদের নিজেদের ছবি নিজেরাই তুলছেন। এমন সেলফি উন্মত্ততা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আলেমরা।
শেখ আসিম আল হাকীম নামে জেদ্দার একজন আলেম আরব নিউজকে জানান, হজ্বে গিয়ে ছবি তোলা হজের বিশুদ্ধতার পরিপন্থী কাজ। এতে ইবাদতের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হয়।
অবশ্য ছবি তোলা নিয়ে ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে হজ্বে গিয়ে সেলফি তোলার মতো কাজের বিরুদ্ধে অনেকেই একমত। তাই সেলফি তোলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
শেখ আসিম আল হাকীম আরো বলেন, সুন্নাহর খেলাপ যাতে না হয়, সে জন্য এমনটি করা থেকে সবারই বিরত থাকা উচিত।
ইসলামী চিন্তাবিদ শেখ আবদুল রাজ্জাক আল-বদর হজ্বের সময় সেলফি তোলা নিয়ে হাজিদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘যখন হজ্বরত মুহাম্মদ (সা) যেতেন, তখন তিনি বলতেন- হে আল্লাহ! রিয়া ছাড়া আমাকে এই হজ্ব পালনের তাওফিক দান করুন।’
সেলফি প্রবণতায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ইবাদত নয়, বরং তাদের এখানে আসার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ছবি তোলা।’
জাহরা মোহাম্মদ নামে রিয়াদে ইসলামী গবেষণার একজন শিক্ষক এ বিষয়ে একমত পোষণ করে বলেন, সেলফি হচ্ছে এক ধরনের আস্ফালন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মসজিদুল হারামে হাজিদের পবিত্র কাবাকে পিছনে রেখে ছবি তুলতে দেখেছি এবং তারপর এই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হয় সবাইকে দেখানোর জন্য। এই আস্ফালনের মাধ্যমেই তারা তাদের এবাদত বিনষ্ট করছে।’
ইসলামী চিন্তাবিদ বিশেষ করে মিশরের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতিসহ অনেকেই ছবি তোলার এ বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেন। তবে এর রাশ টেনে ধরা সহজ হবে না বলে অনেকে মনে করছেন। একজন হজ্বযাত্রী বলেন, ‘বলতে গেলে প্রায় সবার কাছেই ক্যামেরা ফোন রয়েছে, তাই এটি বন্ধ করা সহজ নয়।’
আগে পবিত্র মসজিদের ভেতরে ক্যামেরা ফোন নিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। যে কারণে অনেকেই বলছে, এই ‘সেলফি জ্বর’ বন্ধ করা কঠিন হতে পারে।