ব্রিটিশ প্রস্তুতকারকদের অনুপ্রেরণা বাংলাদেশি মামুন
যখন জর্জ অসবোর্ন ‘ইনস্টিটিউট অব ডিরেক্টর্সে’ বলছিলেন যে ছোট কোম্পানিগুলো ইউরোপের বাইরের দেশগুলোতে রফতানি করা নিয়ে ‘বেশি ভীত থাকে’, তখন হয়তো ব্রিটিশ প্রস্তুতকারদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে মামুন চৌধুরীর ডুফেল কোটের কাহিনি বলতে পারতেন তিনি।
লন্ডনের ইস্ট এন্ডের একটা ছোট কারখানাতে ডুফেল কোট বানিয়ে আন্তর্জাতিক কাপড় বাজারের প্রতিযোগিতায় সাফল্যের সঙ্গে ব্যবসা করছেন চৌধুরী।
১৯৯১ সালে প্রায় রিক্তহস্তে প্রথম লন্ডনে গিয়েছিলেন মামুন। দেশ থেকে তৈরি শার্ট রফতানি করে তিনি পোশাক ব্যবসা শুরু করেন।
কয়েক বছর পর মামুন ডাফল কোট বানানোর উদ্যোগ নেন। গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটাই আমার চরিত্র। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি ভিন্ন কিছু করতে। তখন কেউই ডাফল কোট বানাচ্ছিল না।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের কারণে মামুনদের পারিবারিক ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর যুদ্ধ শুরু হয় মামুনের। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সাফল্য সম্পর্কে একাগ্র ছিলাম। যদি মাইকেল মাকর্স (মার্ক এন্ড স্পেন্সার) করতে পারেন, তবে আমি কেন পারব না?’
কিন্তু মামুন যখন নিজের পোশাক কারখানা স্থাপন করতে যান তখন লন্ডনের ইস্ট এন্ড থেকে অনেক প্রস্তুতকারীর অনেক দূর চলে গেছেন। এরপর মামুন দামি ডুফেল কোট বানানোটাকেই কৌশল হিসেবে নিলেন। ২০০২ সালে রব হিউসনকে সঙ্গে নিয়ে ‘লন্ডন ট্র্যাডিশন’ নামে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। ‘মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার’ ও ‘অ্যাকুয়াসকুটুম’ এর মতো বড় টেক্সটাইল কোম্পানিতে কাজ করেছেন রব হিউসন। তাদের তৈরি ডুফেল কোটের দাম ৩০০ পাউন্ড থেকে এক হাজার ৫০০ পাউন্ড।
লন্ডন ট্র্যাডিশন এখন বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোট রফতানি করে। তৈরি কোটের ৯০ ভাগই রফতানি হয়। ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ৮৬৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অবদান রাখায় চলতি বছরের জুলাইয়ে একটি কুইন’স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। সূত্র: গার্ডিয়ান।