হিজাবের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা করে তরুণীর জয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্ট (স্কটাস) এক তরুণীর হিজাব-সংক্রান্ত মামলা পুনর্বিবেচনা করে জানিয়েছেন, পোশাক বিক্রয়কারী এবারক্রমবি অ্যান্ড ফিচ ওই তরুণীকে হিজাবের কারণে চাকরি না দিয়ে বৈষম্য করেছে। দেশটির ইতিহাসে হিজাব-সংক্রান্ত প্রথম কোনো মামলা দায়ের করেন সামান্তা ইমাম ইলিয়াফ নামের ২০ বছর বয়সী তরুণী। আদালত একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানকে ধর্মীয় পোশাকের অনুমিত দিয়ে ড্রেস কোড পরিবর্তন করতে বলেছে।
এবারক্রমবি অ্যান্ড ফিচ স্টোরস ইনকরপোরেশনে হিজাব পরে সামান্তা ইলিয়াফ ২০০৮ সালে বিক্রয়কর্মী পদে চাকরির মৌখিক পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অবশ্য এ সময় তার ধর্ম পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হয়নি।
এরপর তিনি ইক্যুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টকে ওই কোম্পানি শুনানি না করার আবেদন জানায়। তারা যুক্তি হিসেবে আদালতকে জানায়, মুসলিম তরুণী নিজেই জানেন তার পোশাক প্রতিষ্ঠানের ড্রেস কোডের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই পোশাককে ‘ক্লাসিক্যাল ইস্ট কোস্ট কলেজিয়েট স্টাইল’ বলা হয়ে থাকে।
চাকরি প্রার্থী সামান্তা হিজাব পরে সাক্ষাৎকারে যান। তিনি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আগে থেকে স্পষ্ট তথ্য জানতেন না। শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে হিজাব পরে তিনি সাক্ষাৎকারে গিয়েছিলেন।
ধর্মীয় কারণে এ ধরনের পোশাক পরলে এবং চাকরির ক্ষেত্রে বৈষ্যমের শিকার হলে তার জন্য ওই চাকরি প্রার্থীকেই দায়ী থাকতে হবে- প্রতিষ্ঠানের এমন নিয়ম তাকেও শুনিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর ওয়াশিংটন পোস্ট এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সে সবের সঙ্গে আনুষঙ্গিক তথ্য নিয়ে স্কটাসের ব্লগে লিংক দেওয়া হয়।
ইক্যুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশন সামান্তার পাশে এসে দাঁড়ায়। ডেনেভারভিত্তিক দশম মার্কিন সার্কিট কোর্টে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেন সামান্তা।
এরপর সেটি সুপ্রিমকোর্টে গেলে বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে এবারক্রমবি অ্যান্ড ফিচ অতীতের ড্রেস কোডে পরিবর্তন এনে ধর্মীয় পোশাককে অনুমোদন করে। তবে তারা শর্ত হিসেবে জানিয়ে দেয়, ওই চাকরি প্রার্থীকে অনুমতি দেওয়া হবে না, যাকে তার ধর্মীয় ফ্যাশনের কারণে চেনা যাবে না।
বিচারক ওহাইওভিত্তিক নিউ অ্যালবেনি কোম্পানি তরুণীর প্রতি বৈষম্য করেছেন বলে নিম্ন আদালত যে রায় দেন, তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
ফেডারেল বিচারপতি এ ঘটনায় সামান্তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইক্যুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনকেও প্রশংসা করেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল।