শান্তিতে নোবেল পেলেন মালালা ও কৈলাশ
এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন পাকিস্তানে তালেবান হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া মালালা ইউসুফজাই এবং ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাশ সত্যার্থী। শুক্রবার নরওয়ের অসলোয় নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান থরবিয়ন জাগল্যান্ড শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করেন। শিশুদের শিক্ষার অধিকার রক্ষায় এবং শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তারা যে অবদান রেখেছেন তার স্বীকৃতি হিসেবে তাদের এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল পুরস্কার জয়ের অসামান্য গৌরব অর্জন করলেন মালালা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল জয়ের ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম। মালালা গত বছরও এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরস্কার পাননি।
এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৭৮ জনকে মনোনীত করা হয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে শেষ পর্যন্ত এই দুজনকে বেছে নেয়া হয়।
মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানের তালেবান নিয়ন্ত্রিত একটি অঞ্চলে মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে তার সাহসী ভূমিকার কারণে প্রথম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজরে আসেন।
তালেবান জঙ্গীরা মালালাকে স্কুল থেকে ফেরার পথে মাথায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়। ওই ঘটনা তাকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি এনে দেয়।
ওই হামলা থেকে সেরে উঠার পর মালালা মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে তার প্রচারণা অব্যাহত রাখেন। তিনি এই বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক বিশেষ অধিবেশনে বক্তৃতাও দেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফ নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় মালালাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মালালা পাকিস্তানের গর্ব। তার সংগ্রাম এবং অঙ্গীকার থেকে বিশ্বের ছেলে-মেয়েদের অনেক কিছু শেখার আছে।
২০১৩ সালে মার্কিন সাময়িকী টাইম মালালাকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে বর্ণনা করে। গত বছর মালালা ইউরোপীয় ইউনিয়নের শাখারভ মানবাধিকার পুরস্কার পান।
ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাশ সত্যার্থী ছিলেন পেশায় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু প্রায় তিন দশক আগে তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষায় ‘বাচপান বাঁচাও আন্দোলন’ বা শৈশব রক্ষা আন্দোলন শুরু করেন। ভারতে শিশু শ্রম বন্ধ এবং শিশু পাচার প্রতিরোধে তার প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৮৯৫ সালে আলফ্রেড নোবেলের উইলমতে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল জয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
শুরু থেকে পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থসহায়তায় ১৯৬৮ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল দেয়া শুরু হয়।
পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য ও অর্থনীতিতে পুরস্কার সুইডেন থেকে দেয়া হলেও শান্তিতে নোবেল দেয় নরওয়ে।