নরওয়ের ‘প্রথম’ বাল্যবিয়ে ঘিরে তুলকালাম !

Norway‘হ্যালো, আমার নাম থিয়া। বয়স ১২। এক মাসের মধ্যেই আমার বিয়ে হচ্ছে।’ নরওয়েতে গত এক মাস ধরে থিয়ার লেখা এই ব্লগটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। কারণ এভাবে খাতা-কলমে ঘোষণা করে ১২ বছরের একটি ‘শিশু’কন্যা বিয়ে করতে চলেছে। শিশুই তো! ১২ বছর বয়সের মেয়েরা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যায়, মাঠে গিয়ে খেলে। কিন্তু বিয়ের পিঁড়িতে বসে না। অন্তত ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই বসে না। কিন্তু এক্ষেত্রে নরওয়েকে একটু ব্যতিক্রমই বলা চলে। তা ঠিক কবে হচ্ছে থিয়ার বিয়ে? অনুষ্ঠান হচ্ছে আজ শনিবার। পাত্রও বেশ ভালো। সুন্দর, স্বাস্থ্যবান, রোজগেরে। নাম গেয়ার, বয়স ৩৭! তবে এবার এই অসম বয়সের বিয়ে নিয়ে নরওয়েজুড়েই শোরগোল পড়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বাড়ির ডিনার টেবল, কোথাও এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। অনেকে সুনাগরিকের কর্তব্য করে শিশুকল্যাণ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। কাকতালীয়ভাবে সেদিন আবার জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর গার্লস। এর থেকে বড় দুর্ঘটনা আর কী হতে পারে! কিন্তু ঠিক দুর্ঘটনা হচ্ছে না। কারণ এটা নরওয়ের চিলড্রেন্স ডেভেলপমেন্ট চ্যারিটি থিয়ার কাহিনী তৈরি করে জন চেতনা বাড়ানোর কাজ করছে। তারা একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, প্রতি বছর সে দেশে প্রায় ৩৯ হাজার মেয়ের খুব কম বয়সে বিয়ে হয়। তাই সোশ্যাল মিডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে সরকার। প্রচার কার্যের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, আমাদের আশা, দেশের মানুষের চোখ এর ফলে ভালো করে খুলবে এবং তারা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন। যাতে এর পর থেকে দেশে প্রতি বছর এত মেয়ে এ রকম দুর্ভাগ্যের শিকার না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা এক প্রজন্মের মধ্যেই বাল্যবিয়ের মতো প্রথা শেষ করতে চাই। যদি এই প্রজন্মের সব মেয়েরা ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সে বিয়ে করেন। তবে আমরা নিশ্চিত, তারা তাদের মেয়েদের কম বয়সে কিছুতেই বিয়ে দেবেন না। এই উদ্যোগের জন্য অবশ্যই সাধুবাদ প্রাপ্য তাদের। কিন্তু আমাদের দেশে এমনভাবে মানুষের চোখ কবে খুলবে? প্রশ্নটা তো সহজ আর উত্তরও তো জানা। কিন্তু সত্যিই উত্তরটা জানা নেই। প্রত্যেক বছর আমাদের দেশে লাখ লাখ মেয়ের খুব কম বয়সে বিয়ে হয়। প্রতিনিয়ত দুর্ভাগ্যের শিকার হয় অগণিত মেয়ে। এভাবে আমাদের দেশেরও কি প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় না?

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button