আইএস বিরোধী জোটে যোগ দেবে না বাংলাদেশ
আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গঠিত জোটে বাংলাদেশ যোগ দিবে না। আপাতত মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর গভীর পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কটে জাতিসংঘ কি উদ্যোগ নেয়- সেটিও দেখার অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ। একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য মিলেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গত ক’দিন ধরে এ নিয়ে সিরিজ আলোচনা হয়েছে। তেজগাঁও ও সেগুনবাগিচার মধ্যে দফায় দফায় সংলাপে চুলচেরা বিশ্লেষণের পর নীতিনির্ধারকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, আপাতত কোন জোটে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য সমীচীন হবে না। কারণ হিসাবে যে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এসেছে তা হলো- মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লাখ লাখ বাংলাদেশী নাগরিক রয়েছেন। জোটে গেলে তারা আইএস-এর টার্গেটে পরিণত হতে পারেন। এতে কেবল তাদের জীবিকার ওপর-ই আঘাত হবে না , জীবনও হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাছাড়া বাংলাদেশের কাছের কিংবা দূরের কোন প্রতিবেশী এখনও ওই জোটে যোগ দেয়নি। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছে কেবল মাত্র জাতিসংঘ কোন উদ্যোগ নিলে তাতে অংশ গ্রহণের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনায় নেবে বাংলাদেশ। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কটময় এলাকায় মানবিক সাহায্যে পাঠাতে ওই সংস্থা উদ্যোগী হলে বাংলাদেশ সেখানে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকতে চাইবে। সরকারের ওই অবস্থানের বিষয়ে গতকালই প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কেন্দ্রিক ব্যস্ততা এবং ঈদ-পূজার ছুটির পর মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের (পরিচালক ও তদূর্ধ্ব) নিয়ে বসেছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। পেশাদার কূটনীতিকসহ কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের ওই বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে সরকারের অবস্থানও ব্যাখ্যা করা হয়। পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে পেশাদার কূটনীতিকদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে যে ধরনের সিদ্ধান্ত আসবে তা পেশাদারিত্বের সঙ্গে বাস্তবায়নেরও নির্দেশ দেয়া হয়।