সাত বছর পর চালু হচ্ছে বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট
দীর্ঘ ৭ বছর বন্ধ থাকার পর চলতি মাসেই চালু হতে যাচ্ছে বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। অভ্যন্তরীণ রুটের উপযোগী দুটি টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজ সংগ্রহে সর্বশেষ দরপত্রে কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়ায় এ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে বিমান সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, উড়োজাহাজ সংকট ও ক্রমাগত লোকসানের কারণে ২০০৭ সালের বিভিন্ন সময়ে অভ্যন্তরীণ ৭টি রুটের মধ্যে ৪টিই বন্ধ করে দেয় বিমান। এর আগে ঢাকা-যশোর রুটে সপ্তাহে ৫টি, ঢাকা-বরিশাল রুটে ২টি ও ঢাকা-রাজশাহী-সৈয়দপুর রুটে দৈনিক একটি করে ফ্লাইট চালু ছিল। পরে ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা-কক্সবাজার রুটের ফ্লাইটও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক রুটের সংযোগ ফ্লাইট হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
এ অবস্থায় গত বছরের মার্চে বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ রুট চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, রাজশাহী ও সৈয়দপুরে ফ্লাইট শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় বিমান কর্তৃপক্ষ। সেই সময় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জন কেভিন স্টিল এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। তবে এসব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান পরিচালনা পর্ষদ ছোট আকৃতির দুটি নতুন উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে অর্থসংকটের কারণে কেনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে কম জ্বালানি খরচের ৪৫ থেকে ৮০ আসনের দুটি টার্বো-প্রপেলারভিত্তিক উড়োজাহাজ পাঁচ বছর মেয়াদে ইজারা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে হিসেবে ড্রাই লিজ অথবা লিজ-পারচেজে নেয়ার জন্য সপ্তম দফায় দরপত্র আহবান করে সংস্থাটি। দরপত্রে বলা হয়, উড়োজাহাজ দুটির বয়স ১০ বছরের নিচে হতে হবে এবং এর নকশা, ইঞ্জিন ও প্রপেলার অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) অথবা ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) সার্টিফায়েড হতে হবে। এছাড়া বিমান পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে উড়োজাহাজ দুটি দিয়ে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ফ্লাইট শুরু করার কথাও দরপত্রে বলা হয়। এর আগে ২৫ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভবনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে বিমানকে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালু করতে বলেন কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ২০০৯ সালে ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৭, ২০১০ সালে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৩৩, ২০১১ সালে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০, ২০১২ সালে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ১০৮ এবং ২০১৩ সালে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী পরিবহন হয় ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১৯ জন। এসব যাত্রীর বেশির ভাগই পরিবহন হয় বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলার মাধ্যমে। এসব এয়ারলাইন্স লাভ করলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিমান।
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন এম মোসাদ্দেক আহমেদ বলেন, সর্বশেষ দরপত্রে কয়েকটি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় প্রস্তাবগুলো তোলা হবে। পর্ষদের অনুমোদন পেলেই উড়োজাহাজ সংগ্রহের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সে হিসেবে চলতি মাসেই অভ্যন্তরীণ রুটে পুনরায় ফ্লাইট শুরু করা সম্ভব হবে।