লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তি দাবি বাংলাদেশী মুসলিমস ইউকের

BD Muslims UKআওয়ামী লীগ সরকারের সদ্য অপসারিত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর শাস্তি দাবি করেছে বাংলাদেশী মুসলিমস ইউকে। হজ ও তাবলীগ জামাত নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে লন্ডনে সর্বদলীয় উলামা সংগঠন বাংলাদেশী মুসলিমস ইউকে’র প্রতিবাদ সভায় এ শাস্তির দাবি করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি হলে বাংলাদেশী মুসলিমস ইউকে’র সভাপতি মাওলানা জমশেদ আলীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা আবদুল হাই খান ও হাফিজ মাওলানা নাজির উদ্দিন এর পরিচালনায় এ সভায় বক্তব্য রাখেন জমিয়তুল উলামা ইউরোপের সাবেক সভাপতি মাওলানা শায়খ আসগর হোসাইন, ইসলামী শরীয়া কাউন্সিল বৃটেনের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা আবু সাঈদ, হেফাজতে ইসলাম ইউরোপের সভাপতি মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আবদুল কাদির সালেহ, সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকের আহবায়ক এম এ মালেক, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুন মোরশেদ, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার নজির আহমদ, মাজাহিরুল উলুম লন্ডন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইমদাদর রহমান মাদানী, বিশিষ্ট ইসলামী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুফতি আবদুল মুনতাকীম, ইসলামিক ফ্রন্ট ইউকের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল মুনিম চৌধুরী, দাওয়াতুল ইসলামের নেতা মাওলানা রেজাউল করীম, আলহাজ্ব নূর বকস, আল আকসা মসজিদের খতীব মাওলানা ছাদিকুর রহমান, জমিতুল উলামা ইউকের সভাপতি মাওলানা শাহ মোহাম্মদ আনাস, সেক্রেটারি মাওলানা মোহাম্মদ কাওসার, কবি ও সাংবাদিক আবু সুফিয়ান চৌধুরী, টিভি প্রেজেন্টার আজমল মসরুর, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাধারণ সস্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, দুঃশাসন ও আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলনের সভাপতি এম এ আজাদ, যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক এম সদরুজ্জামান খান, আল কুরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওলানা হাসান নূরী চৌধুরী, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহ মিছবাউর রহমান ও সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা শওকত আলী প্রমুখ।
সম্মেলনে লিখিত প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সেইভ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার নজরুল ইসলাম। সমাবেশে মহানবী, ইসলাম, হজ ও তাবলীগ সম্পর্কে কুটক্তিকারী আবদুল লফিত সিদ্দিকীর শাস্তি, আওলামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিদের ইসলাম সম্পর্কে মিথ্যা বানোয়াট ও কুটক্তিপূর্ণ এবং ঈমান আকীদা পরিপন্থী বক্তব্যের নিন্দা ও প্রত্যাহারের দাবী, ইসলামী সভা, সমাবেশ ও তাফসীর মাহফিলের উপর কঠোরতা আরোপ এবং তা করতে না দেয়ার নিন্দা, শাপলা চত্তরের গণহত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং নাটক সিনেমা ও সিরিয়ালে আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামকে কটাক্ষকারী চরিত্র বন্ধ করন এবং আল্লাহ, রাসূল ও ধর্ম অবমাননাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান ব্লাসফেমী আইন প্রবর্তনের দাবী সম্বলিত পাঁচ দফা সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সভায় বক্তাগণ আবদুল লফিত সিদ্দিকীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান। তারা বলেন, তার এ বক্তব্যে শুধু ধর্মীয় বিদ্বেষই প্রকাশ পায় নাই; বরং ইসলাম সম্পর্কে তার চরম অজ্ঞতা এবং মুর্খতাই প্রকাশিত হয়েছে। মহানবী (সা:), হজ্ব ও তাবলীগ জামাত সম্পর্কে তার বক্তব্য ধৃষ্টতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। সালমান রুশদী, দাউদ হায়দার এবং তসলিমা নাসরিনের মতোই সে দম্ভোক্তি করে বলে যে, সে তার বক্তব্যের জন্য অনুতপ্ত নয়, তা প্রত্যাহারেরও প্রশ্ন উঠে না- যা বলেছে সে তার দায়িত্ব নিয়েই বলেছে। এরপর তার কাছ থেকে কোন ভব্য আচরণ আশা করা যায় না। তারা বলেন সে একজন স্বঘোষিত মুরতাদ।
মাওলানা শাখ আসগর হোসেন বলেন, লতিফ সিদ্দিকী তার নিজ নামেরও অপমান করেছে। সিদ্দিকী বলা হয় সত্যবাদীকে। এখন থেকে সে আখ্যায়িত হবে কাজ্জাবী বা মিথ্যাবাদী হিসেবে। মুফতি সদর উদ্দিন বলেন, লতিফ সিদ্দিকী এই ধৃষ্টতা দেখাবার সাহস কিভাবে পায়, আমাদেরকে তার গোড়ায় যেতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষতা হলো বাংলাদেশে নাস্তিকতার মূল কারণ। বাংলাদেশ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে উৎখাত করতে হবে।
মাওলানা আবু সাঈদ বলেন, বাংলাদেশে লফিত সিদ্দিকী একা নয়। বর্তমানে হাসিনা সরকার হচ্ছে এদের মদদদাতা। শেখ হাসিনা নিজের অপকর্ম ঢাকবার জন্যে একের পর এক ইস্যু তৈরী করে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।
মাওলানা আবদুল কাদির সালেহ বলেন, লতিফ সিদ্দকীর বিচারে কোন রকম টাল বাহানা দেশের তাওহিদী জনতা মেনে নেবেনা। এখন পর্যন্ত লতিফ সিদ্দিকীর কুটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল না করা সরকারের দুর্বিসন্ধিরই বহিঃপ্রকাশ। অবিলম্বে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।
এম এ মালেক বলেন, ইসলামকে অবমাননার কারণে লতিফ সিদ্দিকীর মন্ত্রীত্ব যায় নাই। তার মন্ত্রীত্ব গিয়েছে হাসিনা পুত্র জয় সম্পর্কে বক্তব্য দেয়ার কারণেই। বুঝা যায়, শেখ হাসিনা ইসলামের চেয়েও তার এবং তার পরিবারের অবস্থানকেই সব কিছুর উপরে মনে করে। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জমশেদ আলী বলেন, আন্দোলন ছাড়া কোন দাবী আদায় হয় না। লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আমরা ঈমানী দায়ীত্ব পালন করছি। তিনি যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে এসে সর্বাত্মক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নেমে পড়ার জন্য কালিমা বিশ্বাসী সকল মুসলমানের প্রতি আহবান জানান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button