বিদেশি অর্থ খরচের খাত জানা যাবে অনলাইনে
বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণ বিদেশি সহায়াতা পায় বাংলাদেশ। এ অর্থ কোন কোন খাতে খরচ হয়, তা এখন জানা যাবে অনলাইনে।বিদেশি অর্থ রোববার রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশ এইড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা ‘এইমস’ (www.aims.erd.gov.bd) নামে একটি ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবদুল মাল মুহিত। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
বিদেশি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো সর্বোচ্ছ গ্রহীতা দেশ- এ কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, এটা হয়েছে এই কারণে যে,সহায়তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্য যে কোন দেশের তুলনায় আমাদের সক্ষমতা অনেক বেশি। ইতিবাচক দিক হচ্ছে এ দক্ষতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশি সাহায্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর যে পরিমান সহায়তা পাওয়া গেছে,তা ছিলো মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১২ শতাংশ। বর্তমানে এই সহায়তা কমে দাঁড়িয়েছে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৮ ভাগ। তার অর্থ এই যে, বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদের আহরণের সামর্থ্য অনেক বেড়েছে।
উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে অধিক বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এ মুহুর্তে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বেশ ভালো। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে হতে হলে বাংলাদেশকে ৯ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।এ লক্ষ্য অর্জনে বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি সহায়তা যথাযত ব্যবহার করতে হবে বলে -জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মমিউর রহমান,অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব মেজবা উদ্দীন আহমেদ।
ইআরডি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ‘এইমস’ হচ্ছে এমন একটি ওয়েব ভিত্তিক সফটওয়্যার,যার মাধ্যমে বিদেশ থেকে আসা উন্নয়ন তহবিল-সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া যাবে। দেশের যেকোনো নাগরিক,দাতা দেশ ও সংস্থা,সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন। এ তথ্যভান্ডারটি সবার জন্য উন্মুক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তার পরিমান বার্ষিক ২০০ কোটি ডলার বা সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
‘এইমসে’ তথ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশে কার্যরত সব দাতা দেশ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে এই ওয়েবসাইটে নিবন্ধন নিতে হবে। ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাংক,এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি),জাইকা,ইউএসএইডসহ ১৭টি দাতা সংস্থা রেজিস্টেশন করে তথ্য সরবরাহের কাজ শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বৈদেশিক সাহায্যের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্পের আওতায়- এই তথ্য ভান্ডার তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সময় ধরা হযেছে সেপ্টেম্বর ২০১১ থেকে জুন ২০১৬ পর্যন্ত।
এ প্রকল্পের ব্যয় ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ডলার। প্রকল্পটিতে সরকার ছাডা ও ইউএনডিপি, ডিএফআইডি, অস্ট্রেলিয়ান এইড ও ড্যানিডা অর্থসহায়তা দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধি ও ইআরডির নীতি নির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।