ধনী দেশগুলোতে ২৬ লাখ শিশু দারিদ্র্যসীমার নিচে
২০০৮ সালে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশ্বের ধনী দেশগুলোতে অন্তত ২৬ লাখ শিশু দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ইউনিসেফ প্রকাশিত ‘মন্দার শিশুরা’ শীর্ষক এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।
ইউনিসেফের রিপোর্টে বলা হয়, যে মহামন্দার পর সবচেয়ে গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে ৪১টি দেশে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসরত শিশুর সংখ্যা বেড়ে ৭ কোটি ৬৫ লাখে দাঁড়িয়েছে।
ইউনিসেফের বৈশ্বিক নীতি কৌশল প্রধান জেফরি ও’ম্যালে বলেন, ‘অনেক ধনী দেশে পারিবারিক আয়ের ক্ষেত্রে বিরাট অবনতি ঘটেছে। আর এটি শিশুদের ও তাদের সমাজের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে।’ জাতিসঙ্ঘ শিশু সাহায্য সংস্থার এ রিপোর্টে শিল্পোন্নত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থার মূল্যায়ন করে এ কথা বলা হয়েছে।
রিপোর্টটিতে দেখা যায়, ৪১টি দেশের মধ্যে ২৩টি দেশেই মন্দার কারণে প্রত্যক্ষভাবেই দারিদ্র্য বেড়েছে।
এতে বলা হয়, যেসব দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানকার শিশুরাই বিশেষ করে বেশি দারিদ্র্যের কষাঘাত সইছে। আয়ারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, লাটভিয়া, গ্রিস ও আইসল্যান্ডে দারিদ্র্য বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। ইউনিসেফের রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চলের শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাজেট কমানোর ফলে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে শিশুদের ওপর।
গ্রিসে সবচেয়ে বেশি শিশুদারিদ্র্যের হার ৪০.৫ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম হলো নরওয়েতে ৫.৩ শতাংশ, (২০০৮ সালে ছিল ৯,৬ শতাংশ। লাটভিয়া ও স্পেনে শিশু দারিদ্র্যের হার ৩৬ শতাংশেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে এ হার ৩২ শতাংশ।
৪১টি দেশের মধ্যে ১৮টির শিশুদারিদ্র্য চিলির চেয়ে বেশি। চিলির শিশুদারিদ্র্য ৩১.৪ শতাংশ থেকে কমে ২২.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এ দেশগুলোর শিশুদারিদ্র্যের অবস্থা ২০০৭ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ব্যাপক অবনতি ঘটে।
রিপোর্টে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে অনেক পরিবারকে মন্দার কারণে মৌলিক চাহিদা পূরণ ও শিক্ষার প্রয়োজন পূরণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দার পর থেকে এত বেশি বেকার আর দেখা যায়নি। এ বেকারত্বের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে শিশুদের ওপর।