নির্বাচনী তহবিল গঠনে রুশনারা আলীর ভোজসভা
নাজমুল হোসেন: সেই ৮০’র দশকে মাত্র ৭ বছর বয়সে বাবা-মার সাথে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। বিশ্বখ্যাত বিদ্যাপিঠ অক্সফোর্ডে পড়াশুনা করেছেন। ২০১০ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রথম কোনো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতএমপি হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে যে শেকড়ের বন্ধন তা মোটেও ভুলে যাননিব্রিটিশ লেবার দলীয় এমপি রুশনারা আলী।
নিজের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে আয়োজিত ভোজ সভায় রুশনারা আলী শুধু বাঙালি রমনীর পোশাক সালওয়ার কামিজ পরেই হাজির হননি; এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি আবারো স্বরণ করেন সেই ৮০’র দশকের মূহুর্ত গুলোকে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধায় পূর্ব লন্ডনের আট্রিয়াম হলে এই ভোজসভা (ফান্ডরেইজার গালা ডিনার) অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৫ শতাধিক অতিথি ভোজ সভায় অংশ নিয়ে নির্বাচনী ব্যয় মিটাতে তহবিল গঠনে রুশনারা আলীকে সহয়তা করেন। রুশনারা আলী পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এন্ড বো আসন থেকে পুনরায় এমপি পদে লড়বেন। মাত্র ৬ মাস পর আগামী মে মাসে পরবর্তী ব্রিটিশ সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৯৭৫ সালে সিলেটের বিশ্বনাথে জন্মগ্রহণ করেন রুশনারা আলী।
রুশনারা আলীর সাথে বাংলাদেশ সফরের কথা স্বরণ করে তাঁর সহকর্মী শাবানা মাহমুদ এমপি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ রুশনারাকে নিয়ে কতটা উচ্ছসিত-তা তিনি নিজ চোখে দেখেছেন।
তিনি বলেন, নিজের শেকড়ের (রুটস) সাথে সম্পর্ক রাখা প্রত্যেকের জন্য জরুরী। কাজটি অনেক কঠিন হলেও রুশনারা তা ভালভাবেই করে যাচ্ছেন। শাবানা মাহমুদএমপি এবং কো-অপারেটিভ পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি কার্যান ক্রিস্টিনসেন এই ভোজ সভার আনুষ্ঠানমালা পরিচালনা করেন।
রুশনারা আলী বলেন, তাঁর মত অন্য আরো অনেক বাংলাদেশীসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ ব্রিটেনে গিয়ে বসতি গড়েছে। বহু সংস্কৃতির ব্রিটেনকে লেবার পার্টিই সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বৈচিত্রপূর্ণ ব্রিটেনকেসামনের দিকে এগিয়ে নিতে লেবার পার্টির কোনো বিকল্প নেই। ২০১৫ সালের নির্বাচনে লেবার দলকে সরকারে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটেনের বাঙালি কমিউনিটিসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানান তিনি।
সম্প্রতি ছায়া মন্ত্রীসভা (শ্যাডো মিনিস্ট্রি) থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল উল্লেখ করে রুশনারা আলী বলেন, ইরাকে বিমান হামলায় ব্রিটিশ বাহিনীর যুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে তিনি কোনোভাবেই সমর্থন করেন না। রুশনারা শিক্ষা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী (শ্যাডো এডুকেশন মিনিস্টার)ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক হেলথ সেক্রেটারি লেবার দলীয় এমপি এল্যান জনসন, ফ্রাঙ্ক ডবসন এমপি, জিম পিটজপেট্রিক এমপি, জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থা ইউগভের পেসিডেন্ট পিটার কেলনার এবং টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টির লিডার কাউন্সিলার র্যাচেল সন্ডার্স। তারা প্রত্যেকেই রুশনারা আলীকে একজন দক্ষ, মেধাবী উদীয়মান নেতা বলে প্রশংসা করেন।
সেইসাথে বক্তারা বর্তমান জোট সরকারের (কনজারভেটিভ এবং লিবারেল ডেমোক্রেট জোট বর্তমানে ক্ষমতায়) ব্যয় সংকোচন নীতির কড়া সমালোচনা করেন এবং লেবার দলকে ভোট দেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
তহবিল সংগ্রহের জন্য অনুষ্ঠানের্যাফল ড্র এবং বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী অতিথিদের কাছে নিলামে বিক্রি করা হয়।